একাত্তরের প্রহরীর আয়োজনে নিউইয়র্কের উডসাইডে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপন
প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক :
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের স্মারক ১৬ ডিসেম্বর—যে দিনটি বাঙালি জাতির হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র অর্জনের গৌরবময় দিন—সে দিনটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য স্মরণে নিউইয়র্কের উডসাইডে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস ২০২৫ উদযাপন করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সংগঠন একাত্তরের প্রহরী।
গত ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, উডসাইডের একটি মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ত্রিশ লক্ষ শহিদের অবিস্মরণীয় আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাঙালি জাতি স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগ চিরকাল জাতির পথনির্দেশক হয়ে থাকবে।
শ্রদ্ধাঞ্জলি পর্বের পর সংগীত শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় মুক্তিযুদ্ধের কালজয়ী গান—
“মুক্তির মন্দির সোপান তলে কত প্রাণ হল বলিদান”,
যা উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের আবেগে আপ্লুত করে তোলে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাত্তরের প্রহরীর অন্যতম সদস্য মিনহাজ আহমেদ শাম্মু। তিনি বলেন, প্রবাসে থেকেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।
আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরু বাঙালি, তাজুল ইমাম, খুরশিদ আনোয়ার বাবলু; এছাড়াও বক্তব্য দেন স্বীকৃতি বড়ুয়া, ফকির ইলিয়াস, জাকারিয়া চৌধুরী প্রমুখ। বক্তারা তাদের বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, স্বাধীনতার অর্জন রক্ষা করতে হলে অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে।
সাংস্কৃতিক পর্বে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গান ও আবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলেন হাসান আল আব্দুল্লাহ, অমৃতা সিংহ, স্বাধীন মজুমদার, তাহমিনা রহমান লাইজু, সাবিহা সালাম, শুক্লা রায়, চৌধুরী ঝর্ণাসহ অন্যান্য শিল্পীরা।
অনুষ্ঠানটি সুশৃঙ্খল ও সার্থকভাবে উপস্থাপনায় ছিলেন শামীম আল আমিন।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ শুধু একটি ভূখণ্ডের স্বাধীনতা নয়, এটি ছিল মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও আত্মপরিচয়ের সংগ্রাম। সেই আদর্শ ধারণ করেই প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

















