দীপু দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নিউইয়র্কে প্রগ্রেসিভ ফোরাম ইউএসএ’র বিক্ষোভ: সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও দ্রুত বিচারের জোর দাবি
প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক :
গার্মেন্টস শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা, মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুনে পোড়ানোর বর্বর ঘটনায় নিউইয়র্কে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রগ্রেসিভ ফোরাম ইউএসএ। প্রচণ্ড শীত ও তীব্র বাতাস উপেক্ষা করে গত ২১ ডিসেম্বর রাত ৭টায় কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে একই স্থানে সন্ধ্যা ৬টায় ইউনাইটেড হিন্দুস অব ইউএসএ’র উদ্যোগে পৃথক একটি প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে দীপু দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকল অপরাধীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি দেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানানো হয়।
প্রগ্রেসিভ ফোরাম ইউএসএ’র সভাপতি হাফিজুল হকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বাচ্চুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদুল ইসলাম, ডা. মোহাম্মদ আজিজুল হক, সাপ্তাহিক সন্ধান পত্রিকার সম্পাদক সনজীবন কুমার, দীলিপ মোদক, রাম দাস ঘরামী, হিরো চৌধুরী, সুলেখা পাল ও উত্তম সাহাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, দীপু দাসের হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের নিরাপত্তাহীনতার ভয়াবহ বহিঃপ্রকাশ। তারা এ ঘটনাকে ‘মধ্যযুগীয় বর্বরতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে গভীর ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন।
বক্তারা আরও বলেন, গুজব ও মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে একজন নিরপরাধ শ্রমিককে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতিই এ ধরনের নৃশংসতার জন্ম দিচ্ছে। অনতিবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
সমাবেশে বক্তারা উল্লেখ করেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশের জন্য এ ধরনের সহিংসতা কখনোই কাম্য নয়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, বাড়িঘর ও উপাসনালয় ভাঙচুরের ঘটনা বেড়ে চলেছে, যা গভীর উদ্বেগের কারণ।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানায় কর্মরত শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাস (২৭)–কে সহকর্মীরা ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগ তুলে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে কারখানা থেকে বের করে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং পরে তার মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

















