বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার ভেটের্যান্স ১৯৭১, ইউএসএ’র দৃঢ় অঙ্গীকার
প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক :
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রতিহত করার প্রত্যয় নিয়ে নিউইয়র্কে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার ভেটের্যান্স ১৯৭১, ইউএসএ।
গত ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্টুরেন্টে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই আয়োজন সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তাফা খান মিরাজ এবং সঞ্চালনা করেন সংগঠনের অন্যতম সদস্য খুরশিদ আনোয়ার বাবলু। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যম সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার ভেটের্যান্স ১৯৭১, ইউএসএ’র সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসাইন। আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রিচি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার চুন্নু, মিজানুর রহমান চৌধুরী, ইসমাইল আনসারী, জাকির হোসেন হিরু, কামরুজ্জামান সিকদার, মনির হোসেন, আহম্মেদ ওয়ালী উল্লাহ, শহীদুল ইসলাম, মকবুল হোসেন তালুকদার প্রমুখ।
এছাড়াও বক্তব্য দেন সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, বাঙালীয়ানা’র সম্পাদক সাগর লোহানী, রাকসুর সাবেক ছাত্রনেতা মুজাহিদ আনসারী, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার প্রতিনিধি মিথুন আহমেদ, অধ্যাপক হুসনে আরা বেগম, সাংবাদিক সনজীবন কুমার, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, ড. আফরিন রিতা, হেলাল মাহমুদ, টি মোল্লা, খান শওকত, হাকিকুল ইসলাম খোকনসহ অনেকে।
সাংস্কৃতিক পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন ও কবিতা পাঠে অংশগ্রহণ করেন আল আমিন বাবু, হাসান আল আব্দুল্লাহ, রাজিব ভট্টাচার্য্য, গোপন সাহা প্রমুখ।
আলোচনা পর্বে বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি নিরস্ত্র জাতির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম। নয় মাসব্যাপী এই যুদ্ধে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার শোষণ, নিপীড়ন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
বক্তারা স্মরণ করিয়ে দেন, এই মহান যুদ্ধে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হন, দুই লক্ষাধিক মা-বোন নির্যাতনের শিকার হন এবং এক কোটিরও বেশি মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের বিনিময়েই ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।
বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও ছায়ানট-এর ওপর সাম্প্রতিক হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সাংস্কৃতিক চেতনাকে ধ্বংস করার যেকোনো অপচেষ্টা প্রবাস থেকেও প্রতিহত করা হবে।
বক্তারা আরও বলেন, বিজয়ের এই মাস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—স্বাধীনতা কোনো দান নয়, এটি কোটি মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গড়ে তোলাই আজ সময়ের দাবি।

















