Logo

আন্তর্জাতিক    >>   শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রমাণহীন অভিযোগ—বিচারের নামে অবিচার ও সত্যের ওপর আঘাতে বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ বাংলাদেশ: জাহিদুল ইসলাম

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রমাণহীন অভিযোগ—বিচারের নামে অবিচার ও সত্যের ওপর আঘাতে বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ বাংলাদেশ: জাহিদুল ইসলাম

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রমাণহীন অভিযোগ—বিচারের নামে অবিচার ও সত্যের ওপর আঘাতে বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ বাংলাদেশ: জাহিদুল ইসলাম

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস আমাদের স্পষ্টভাবে শিক্ষা দেয়—ন্যায়বিচার, সাংবিধানিক বৈধতা এবং জনগণের আস্থা একটি রাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার প্রধান ভিত্তি। এই সত্য উপেক্ষা করে কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তার পরিণতি হয় ভয়াবহ ও সুদূরপ্রসারী। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফাঁসির রায় দিয়ে ইতিহাসের এক নিন্দনীয় অধ্যায় রচনা করেছিল। সেই সময় বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে, অন্যায় বিচার কখনো টেকে না—জনগণের ইচ্ছা ও সত্যের শক্তিই শেষ পর্যন্ত বিজয় নিশ্চিত করে।
দুঃখজনকভাবে বর্তমান বাংলাদেশ আবারও এক সংবেদনশীল ও উদ্বেগজনক রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। সাম্প্রতিক ক্ষমতার পরিবর্তন এবং নতুন প্রশাসনিক কাঠামোকে ঘিরে দেশজুড়ে যেমন আলোচনা চলছে, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশ আজ গভীর পর্যবেক্ষণের আওতায়। বিশেষ করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের প্রতীক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে যে আইনি প্রক্রিয়াগুলো সামনে এসেছে, সেগুলোর স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও ন্যায়সংগততা নিয়ে দেশ-বিদেশে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যেমন, তেমনি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের বড় একটি অংশ মনে করছেন—শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর একটি বড় অংশই সুস্পষ্ট প্রমাণ, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে গড়ে ওঠেনি। বরং এসব অভিযোগের ভেতরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে—যা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত অশনিসংকেত।
কূটনৈতিক মহলে ইতোমধ্যেই আলোচিত হচ্ছে যে কোনো রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি, প্রমাণহীন কিংবা পক্ষপাতদুষ্ট আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ কেবল অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকেই নয়, আন্তর্জাতিক আস্থাকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিচারিক প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বিদেশি বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের মর্যাদার ওপর। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, কূটনৈতিক প্রতিনিধি ও নীতিনির্ধারক মহল বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশ্যে উদ্বেগ জানাচ্ছেন—যা দেশের ভাবমূর্তিকে বিশ্ব দরবারে চাপের মুখে ফেলছে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে আইনের শাসন, মানবাধিকার ও স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থাকে নিঃশর্তভাবে প্রতিষ্ঠা করাই একমাত্র পথ। রাজনৈতিক মতপার্থক্য গণতন্ত্রের স্বাভাবিক অংশ—কিন্তু কোনো রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে গৃহীত আইনি পদক্ষেপ অবশ্যই হতে হবে প্রমাণনির্ভর, সংবিধানসম্মত এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিচারিক মানদণ্ড অনুসরণ করে। অন্যথায় তা বিচার নয়, বরং ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত হবে।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনগণ শেষ পর্যন্ত নীরব থাকে না। যখন ন্যায়বিচারের ওপর মানুষের আস্থা ভেঙে পড়ে, তখন জাতি গণতন্ত্র, সত্য ও অধিকার রক্ষার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হয়। আজ বাংলাদেশের জনগণের মাঝেও ন্যায়বিচার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। মিথ্যা, মনগড়া ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের বিরুদ্ধে জনমনে ক্ষোভ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ—অর্থনীতি, মানবসম্পদ এবং ভূরাজনৈতিক গুরুত্বের দিক থেকে অত্যন্ত মূল্যবান। এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে রাষ্ট্রকে এমন পথে পরিচালিত হতে হবে, যেখানে ন্যায়, দায়বদ্ধতা ও বৈধতার অবস্থান থাকবে সর্বোচ্চ স্তরে। সত্য, সংবিধান ও জনগণের আস্থাই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে একটি আরও সম্মানজনক, স্থিতিশীল ও শক্তিশালী ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
জাহিদুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা