Logo

রাজনীতি    >>   রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার ভয়ংকর নজির : উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত, আহত শিশুদের আর্তনাদ, অব্যবস্থাপনায় বাড়ছে লাশের সংখ্যা

রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার ভয়ংকর নজির : উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত, আহত শিশুদের আর্তনাদ, অব্যবস্থাপনায় বাড়ছে লাশের সংখ্যা

রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার ভয়ংকর নজির : উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত, আহত শিশুদের আর্তনাদ, অব্যবস্থাপনায় বাড়ছে লাশের সংখ্যা

সাদ্দাম হোসেন:

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজের উপর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় জাতি এক হৃদয়বিদারক শোক ও আতঙ্কের মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বহু শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছে, অগণিত শিশু গুরুতরভাবে আহত হয়েছে।

কিন্তু এ দুর্ঘটনার পরপরই রাষ্ট্রযন্ত্রের যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, তা এক ভয়াবহ ব্যর্থতার দলিল হয়ে উঠেছে। আহত শিশুদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতা, জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদানে চরম অব্যবস্থা, রাজনৈতিক শোডাউন, হাসপাতালগুলোতে বিশৃঙ্খলা—সবকিছু মিলিয়ে গোটা জাতি এক বেদনাদায়ক বিভীষিকায় পতিত হয়েছে।

আহতদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ ও চিকিৎসক সংকট, সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া, পর্যাপ্ত রক্ত মজুত না থাকা—এই সবই প্রাণহানির সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে। বহু অভিভাবক হাসপাতাল চত্বরে সন্তানদের রক্তাক্ত দেহ নিয়ে অসহায়ভাবে অপেক্ষা করছেন, বুকভাঙা আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র দেখা যাচ্ছে দেশের শীর্ষ হাসপাতাল ও বার্ন ইনস্টিটিউটে। ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’ সহ অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা পৌঁছাতে পারছে না সঠিকভাবে। রাজনৈতিক দখল, প্রশাসনিক অদক্ষতা ও দুর্নীতির কারণে হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম প্রায় অচল। ইউনূস সরকারের সময়ে স্বাস্থ্যখাতকে দলীয় কার্যালয়, রিসোর্ট ও প্রভাবশালীদের দখলে দিয়ে একে কার্যত ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের হুমকি, মামলা, বদলি ও নির্যাতনের মাধ্যমে পেশাদারিত্বকে বিলুপ্ত করা হয়েছে।

আরও দুর্ভাগ্যজনক হলো, এই সংকটের সময়ও নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা গোপন করা হচ্ছে। সংবাদ সংগ্রহে বাধা, সাংবাদিকদের হয়রানি, শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, প্রতিবাদকারী অভিভাবকদের উপর নির্যাতন—এসব অপকর্ম আমাদের জাতীয় মানসিকতাকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

অথচ অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা মোকাবেলায় অতুলনীয় দক্ষতা ও মানবিক নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন। কোভিড মহামারির সময় তার সুদূরদর্শিতা এবং বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনার মাধ্যমে কোটি কোটি প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল। শেখ হাসিনা তখন গণমানুষের নির্ভরযোগ্য ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। অথচ বর্তমানে একটি অবৈধ, অযোগ্য সরকারের শাসনে রাষ্ট্রযন্ত্র সম্পূর্ণ বিকল হয়ে পড়েছে।

এই বিভীষিকাময় অবস্থায় ছাত্রলীগের কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে আহত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তারা হাসপাতালে গিয়ে রক্ত দিয়েছে, নিজেরা আহত হয়েও অন্যদের সাহায্য করেছে। চিকিৎসকদের খুঁজে এনে দিয়েছে, অ্যাম্বুলেন্স চালিয়েছে, ওষুধ কিনে দিয়েছে, তথ্য সংগ্রহ করে অভিভাবকদের পাশে থেকেছে। এই মানবিক উপস্থিতি আমাদের জাতিগত আশা ও শক্তির উৎস।

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি—এই সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ আছে। আমরা ঘুরে দাঁড়াব। ছাত্রলীগের আদর্শিক সাহস, সংগঠিত মানবিকতা এবং বঙ্গবন্ধুর দর্শনকে বুকে ধারণ করেই আমরা বাংলাদেশকে গড়বো—একটি নিরাপদ, মানবিক ও দায়িত্বশীল রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিতর দিয়ে।

সকল নিহত শিশুদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি, আহতদের জন্য প্রার্থনা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে অব্যবস্থাপনার দায়ে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু

সাদ্দাম হোসেন
সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
ঢাকা, বাংলাদেশ