Logo

রাজনীতি    >>   দেশরত্ন শেখ হাসিনা: উন্নয়ন, মানবতা ও অগ্রগতির প্রতীক: নয়ন বিশ্বাস রকি

দেশরত্ন শেখ হাসিনা: উন্নয়ন, মানবতা ও অগ্রগতির প্রতীক: নয়ন বিশ্বাস রকি

দেশরত্ন শেখ হাসিনা: উন্নয়ন, মানবতা ও অগ্রগতির প্রতীক: নয়ন বিশ্বাস রকি

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতির স্বার্থ রক্ষায় বর্ণনাতীত দেশপ্রেমিক, বিচক্ষণ ও মমতাময়ী এক নেত্রী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নকে লালন করে তার কন্যা শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিয়েছেন একটি উন্নয়নধর্মী বাংলাদেশের পথে — বাংলা জাতির ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায় এভাবেই রচিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন সেই মহানায়ক, যিনি হাজার বছরের শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তির স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেন। পাকিস্তানি শাসনের শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার আহ্বানে লক্ষ লক্ষ লোক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে; “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু” স্লোগানে সমগ্র রণাঙ্গন মুখরিত হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীতে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর হাতে ছিল একটি ধ্বংসস্তূপের মতো দেশ — চারদিকে ক্ষতবিক্ষত অবকাঠামো, পঙ্গু অর্থনীতি, অগণিত হতাহত। এমন বাস্তবতায় তিনি শুরু করেন জনমানুষের কষ্ট কমানোর, সমাজ সংস্কার ও পুনর্বাসনের অভিযান। শিক্ষা, কৃষি ও শিল্পোদ্যোগে যে ভিত্তি তিনি স্থাপন করেছিলেন, সেগুলোই আজকের বাংলাদেশের উন্নয়নের মূলভিত্তি। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নকে সামনে রেখে দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ তীব্র রাজনৈতিক সংগ্রামের পরে ক্ষমতায় এসে তিনি মানবিক নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও অটল সাহসিকতার মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতি নিশ্চিত করেছেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দারিদ্র্য, অনশাসন ও অশিক্ষার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠেছে। কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লবী উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে — সারের, বীজের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করে প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো হয়েছে; খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বাংলাদেশের এক গৌরবোজ্জ্বল সফলতা। শিক্ষায় যুগান্তকারী সম্প্রসারণে লাখ লাখ ছাত্র-ছাত্রী উপকৃত হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা, মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা — এসব উদ্যোগ জনজীবনে নতুন আশা রোপণ করেছে। দুর্যোগ মোকাবেলায়ও শেখ হাসিনা বারবার দৃঢ়তায় উদাহরণ স্থাপন করেছেন; ১৯৯৮ সালের প্রবল বন্যা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক করোনা মহামারিতে সরকারি কার্যক্রম সচল রাখার এবং ভ্যাকসিন সংগ্রহে কূটনৈতিক সফলতা—এসবই তাঁর সংকল্পের প্রমাণ। গৃহহীনদের জন্য লাখো ঘর নির্মাণ, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া — এগুলো দেশের জনজীবনে বাস্তব পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল সহ মেগা প্রকল্পগুলো এখন বাংলাদেশের সামর্থ্য ও পরিকল্পনার প্রতীক।
অন্যদিকে, বর্তমান সময়ে দেশকে বিভক্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত করার নানান প্রভাবশালী শক্তি কাজ করছে—যাদের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক মর্যাদা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা। কিছু সংগঠন ও ব্যক্তির মাধ্যমে ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে; এ ধরনের কল্পিত মৌলবাদী স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর প্রভাব থেকে ধর্মপ্রাণ জনগণকে মুক্ত থাকতে হবে। একজন সমাজনেতা ও নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা হওয়া উচিত—সবার ধর্ম-কর্মের স্বাধীনতা রক্ষা, সহমর্মিতা এবং সহঅবস্থান; যেখানে নির্বিচারে হিংসা বা ভেদাভেদ থাকবে না।
বহুমাত্রিক উন্নয়ন, সামাজিক কল্যাণ ও আন্তর্জাতিক মর্যাদায় বাংলাদেশের অবস্থান স্মরনীয়। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বক্তব্যে শেখ হাসিনার কণ্ঠ সারা বিশ্বে প্রশংসিত; শান্তি মিশনে বাংলাদেশির অবদান গৌরবের যোগ হয়েছে। তবে বিগত কয়েক মাসে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, মতপ্রকাশে বাধা ও প্রশাসনিক নির্যাতন—এসব নিয়ে সমাজে উদ্বেগ আছে। সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার—বিবিধ মতপ্রকাশ, সংবাদস্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা—এসব রক্ষায় আমাদের সবার জবাবদিহি ও সতর্কতার প্রয়োজন।
আজকের প্রশ্ন এই: আমরা কোথায় ছিলাম এবং এখন কোথায় আছি? বর্তমান সময়েই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে—দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে, অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে ও মৌলিক মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় হওয়ার সময় এখনই। তাদের বিরুদ্ধে—যারা দেশকে বিভক্ত করার চেষ্টা করে—প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে; অন্যদিকে, দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ধরনের সংগ্রাম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও জাগ্রত করার মাধ্যমে সম্ভব।
আসুন, আমরা সকলেই যুক্ত হই—দেশের সার্বিক কল্যাণ ও স্বরাষ্ট্রীয় মর্যাদা রক্ষায়। সত্য, ন্যায় ও মানবতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে স্বাধীন সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলি।
জয় বাংলা। বাংলাদেশের দীর্ঘজীবন কামনা করি।

নয়ন বিশ্বাস রকি
(সাবেক ছাত্রলীগ নেতা)