Logo

ইউএসএ নিউজ    >>   যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ সোসাইটির সুবর্ণ জয়ন্তী: ঐতিহ্য, প্রজন্ম ও ঐক্যের মহামিলন

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ সোসাইটির সুবর্ণ জয়ন্তী: ঐতিহ্য, প্রজন্ম ও ঐক্যের মহামিলন

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ সোসাইটির সুবর্ণ জয়ন্তী: ঐতিহ্য, প্রজন্ম ও ঐক্যের মহামিলন

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:
প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৃহত্তম ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি নিউইয়র্কে জমকালো আয়োজনে উদযাপন করলো প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর—সুবর্ণ জয়ন্তী। ২ নভেম্বর অভিজাত ‘টেরেস অন দ্য পার্ক’-এ আয়োজিত এই মহোৎসবে উপস্থিত ছিলেন গত পাঁচ দশক ধরে সংগঠনকে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক নেতৃবৃন্দ, কমিউনিটির বিশিষ্টজনসহ এক হাজারেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি। পুরো আয়োজন রূপ নেয় এক ঐতিহাসিক মিলনমেলায়।

সুবর্ণ জয়ন্তীর সজ্জা, বর্ণাঢ্য মঞ্চায়ন, তথ্যবহুল স্মরণিকা প্রকাশ, আলোচনা, পুরস্কার প্রদান, নৃত্য ও সংগীতসহ বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সকলের মন জয় করে। শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, বাংলাদেশ–আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা এবং ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধসহ সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রয়াত নেতৃত্ব ও সদস্যদের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।


‘আমি বাংলায় গান গাই’ সংগীতের সাথে নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের আহবায়ক ও সোসাইটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মহিউদ্দিন দেওয়ান। এরপর সাংবাদিকতা, সমাজসেবা, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৬ গুণী ব্যক্তিকে এবং একটি সংগঠনকে প্রদান করা হয় “বাংলাদেশ সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড”। সাংবাদিক সৈয়দ মুহাম্মদ উল্লাহ, সমাজসেবক কামাল আহমেদ (তার কন্যা রুমানা আহমেদ অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন), ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব সাইদুর রহমান ডন, সাংস্কৃতিক সংগঠক সেলিমা আশরাফ, শিক্ষাবিদ মোশারফ হোসেন খান চৌধুরী, সংগঠক কাজী আজহারুল হক মিলন এবং ‘দ্য অপ্টিমিস্টস’ এ সম্মাননা লাভ করে।
নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেনিফার রাজকুমার অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটিকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন। কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট অফিস থেকেও প্রদান করা হয় সাইটেশন। করতালির মাধ্যমে সদস্যরা সংগঠনের অর্জনের প্রতি শ্রদ্ধা ও আনন্দ প্রকাশ করেন। ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ বলেন, অর্ধ শতাব্দীর যাত্রায় বাংলাদেশ সোসাইটি আজ প্রবাসীদের গর্ব ও ভালোবাসার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল নতুন প্রজন্মের অনুভূতি প্রকাশ পর্ব। বক্তব্য দেন হার্ভার্ড গ্র্যাজুয়েট নামিরা মেহেদি ও ভিক্টর ঘোষ এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট আনিকা জেবা। তারা জানান, নিউইয়র্কে বাংলাদেশি পরিচয় এখন অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ, যা তাদের কর্মজীবন ও সামাজিক পরিমণ্ডলে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস যোগায়।


সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা ডা. হামিদুজ্জামান বলেন, কার্যকরী কমিটিতে নতুন প্রজন্মকে আরও অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি, কারণ তারাই কমিউনিটিকে মূলধারায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। সাবেক সভাপতি ও সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ডা. মইনুল ইসলাম মিয়া বলেন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখা আমাদের দায়িত্ব। সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ঐক্য, ভালোবাসা ও দেশপ্রেমের শক্তিতে বাংলাদেশ সোসাইটিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, নতুন প্রজন্ম ঐতিহ্য ধারণ করে একটি আরও আধুনিক ও কার্যকর সোসাইটি গড়ে তুলবে।
সঞ্চালনায় ছিলেন শারমিনা সিরাজ সোনিয়া। স্মৃতিচারণ করেন সাবেক সভাপতি ডা. বিল্লাহ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম. এম. শাহীন, ফোবানা চেয়ারপারসন গিয়াস আহমেদ, এটর্নি মঈন চৌধুরী, মূলধারার রাজনীতিক আকতার হোসেন বাদল, নেতা গিয়াস উদ্দিন, রিয়েলটর নুরুল আজিম, আকিব হোসেন, ব্যবসায়ী মোর্শেদা জামানসহ অনেকেই।
সাংস্কৃতিক পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাদশা বুলবুল, প্রতীক হাসান, রানো নেওয়াজ, কালা মিয়া, শাহ মাহবুব, অনিক রাজ, হাসান নীলু প্রমুখ। সুবর্ণ জয়ন্তী স্মরণিকা ‘অগ্রপথিক’ সম্পাদনা করেন আখতার বাবুল এবং ব্যবস্থাপনায় ছিলেন রিজু মোহাম্মদ।


সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও আয়োজনে সহযোগী হিসেবে ছিলেন সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল, সহ সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ভুইয়া, কোষাধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া রুমি, সাংগঠনিক সম্পাদক ডিউক খান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অনিক রাজ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক জামিল আনসারী, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক আশ্রাব আলী খান লিটন, স্কুল ও শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান জিলানী এবং কার্যকরী সদস্য হারুন অর রশিদ, জাহাঙ্গীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মোহাম্মদ সিদ্দিক পাটোয়ারী, আবুল কাশেম চৌধুরী, মুনসুর আহমদ ও হাছান খান প্রমুখ।