Logo

আন্তর্জাতিক    >>   ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ: দেশে-বিদেশে নানা কর্মসূচি

‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ: দেশে-বিদেশে নানা কর্মসূচি

‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ: দেশে-বিদেশে নানা কর্মসূচি

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:
আজ ৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র, উপমহাদেশের অন্যতম প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক গুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৬৩ সালের এই দিনে তিনি লেবাননের বৈরুতে একটি হোটেল কক্ষে নিঃসঙ্গ অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঢাকার সুপ্রিম কোর্টের পাশে তিন নেতার মাজারেই তার চিরনিদ্রা।
১৮৯২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণকারী সোহরাওয়ার্দী ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিখ্যাত বিচারপতি স্যার জাহিদ সোহরাওয়ার্দীর কনিষ্ঠ পুত্র। পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৫৬ সালের প্রথম পাকিস্তান সংবিধান প্রণয়নে তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। ভাষা আন্দোলনের পর বাঙালির জাতীয়তাবাদের উত্থানে তিনি দেন শক্তিশালী নেতৃত্ব। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ঐতিহাসিক বিজয় তারই রাজনৈতিক দূরদর্শিতার ফসল, যা তাকে ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ উপাধিতে ভূষিত করে।
দিবসটি উপলক্ষে সাবেক রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং সাবেক পাঁচবারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

সাবেক রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, সোহরাওয়ার্দী ছিলেন দক্ষ আইনজ্ঞ, প্রাজ্ঞ রাষ্ট্রনায়ক এবং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার রক্ষার পথিকৃত। নাবিক, রেলকর্মী, পাট ও সুতাকল শ্রমিক থেকে শুরু করে রিকশাচালক—সকল শ্রমজীবী মানুষের সংগঠন গড়ে তোলায় তাঁর ভূমিকা ছিল মৌলিক। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করে গেছেন।
শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, সোহরাওয়ার্দী ছিলেন দূরদর্শী রাজনৈতিক সংগঠক, যার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আরও সুসংগঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির দীর্ঘ সংগ্রাম ও মহান স্বাধীনতার পথকে সুদৃঢ় করার ভিত্তি তিনি নির্মাণ করেন। পাকিস্তানের গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি জনগণকে সংগঠিত করেছিলেন—এ কারণেই তিনি গণতন্ত্রের মানসপুত্র।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বলেন, সোহরাওয়ার্দীর দৃঢ় ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব জাতিকে গণতন্ত্রের পথে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন করার আহ্বান জানান।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সকাল ৯টায় সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দীর মাজারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি সংগঠনগুলোও দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে।
বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্যে —
যুক্তরাষ্ট্র সোহরাওয়ার্দী স্মৃতি পরিষদ, শিরি শিশু সাহিত্য কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু প্রচার কেন্দ্র ও সমাজ কল্যাণ পরিষদ, বনলতা শিল্পী-সাহিত্যিক ও সাংবাদিক গোষ্ঠী এবং শেখ হাসিনা মঞ্চ — বিশেষ আলোচনা সভা, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও প্রার্থনার আয়োজন করেছে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী উপমহাদেশে গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবকল্যাণের রাজনীতির এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা, যার জীবন ও সংগ্রাম নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে যুগ পরম্পরায়।