“ হিন্দু মরে দেশ বাঁচায় “ তবু মেলে অপবাদ—এ কেমন ন্যায়বিচার? হিন্দু সুরক্ষা আইন পাশ এবং রাজনৈতিক বলির শিকার হওয়া বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি
প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:
হিন্দুরা এই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে, ঘরবাড়ি ছেড়েছে, সম্ভ্রম হারিয়েছে—তবু দেশপ্রেম থেকে কখনো পিছিয়ে যায়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে প্রতিটি জাতীয় সংকটে হিন্দু জনগোষ্ঠী নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছে দেশের জন্য, মানুষের জন্য। অথচ আজও সেই হিন্দুই অনেক সময় হয়ে উঠছে নিপীড়নের সহজ শিকার।
দেশ বাঁচাতে যারা রক্ত দেয়, তাদের সন্তানেরা আজ মিথ্যা মামলায় জেল খাটে। সমাজের একাংশ, প্রশাসনের কিছু সুবিধাবাদী গোষ্ঠী এবং রাজনীতির কুটিল খেলোয়াড়রা হিন্দুদের ধর্মীয় পরিচয়কে ব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা হাসিল করে। কোথাও কোনো সহিংসতা ঘটলে, তদন্ত না করেই দায় চাপিয়ে দেওয়া হয় হিন্দুদের ওপর। নিরাপরাধ মানুষকে ঘরে বসে ভয় পেতে হয়—কখন কোন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়!
এই পরিস্থিতি আর চলতে দেওয়া যায় না। সময় এসেছে রাষ্ট্রকে দায়িত্বশীল হবার। নাগরিকের ধর্ম নয়, তার অধিকারই হওয়া উচিত মূল ভিত্তি। হিন্দুদের বিরুদ্ধে বারবার বৈষম্য, সহিংসতা ও মিথ্যা মামলার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই হবে।
এই প্রেক্ষাপটে হিন্দু সুরক্ষা আইন পাশ করা এখন সময়ের দাবি। এমন একটি আইন প্রয়োজন, যা স্পষ্টভাবে বলে দেবে—ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে কোনো নাগরিক যেন কখনো হয়রানির শিকার না হয়। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক বলির পাঁঠা হিসেবে হিন্দুদের ব্যবহার করার ধূর্ত অপচেষ্টা চিরতরে বন্ধ করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে ধর্মীয় পক্ষপাত ও অবহেলা দূর করতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা ট্রাইব্যুনাল, দ্রুত বিচার ব্যবস্থা ও ক্ষতিপূরণ আইনেরও চিন্তা করা দরকার।
রাষ্ট্র শুধু তখনই সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক হয়, যখন তার সংখ্যালঘুরাও নিশ্চিন্তে বাঁচতে পারে। হিন্দুরা এই দেশকে ভালোবাসে, এ দেশের মাটিকে মা বলে জানে। তারা কেবল মরতে চায় না—তারা বাঁচতেও চায় সম্মানের সঙ্গে, মর্যাদার সঙ্গে।
এই লেখার উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা নয়, বরং রাষ্ট্রের বিবেককে নাড়া দেওয়া। যারা এই দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে, তাদের যেন বারবার প্রমাণ করতে না হয়—তারা এই দেশেরই সন্তান। এখনই সময় তাদের জন্য নিরপেক্ষ আইন প্রণয়ন এবং সমাজে শান্তি ও ন্যায়ের পরিবেশ নিশ্চিত করার।

















