Logo

আন্তর্জাতিক    >>   বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে ১৯, আহতের সংখ্যা দেড় শতাধিক

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে ১৯, আহতের সংখ্যা দেড় শতাধিক

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে ১৯, আহতের সংখ্যা দেড় শতাধিক

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ঢাকার উত্তরা উত্তরের দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের উপর বিধ্বস্ত হয়েছে। আজ সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১টার পর স্কুল ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। প্রথমে ৩ জনের হতাহতের এবং বেশ কয়েকজনের আহত হবার খবর পাওয়া গেলেও এ পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন  বলে জানা গেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) হতাহতের এ সংখ্যা নিশ্চিত করে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। আইএসপিআরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিধ্বস্ত হওয়া প্রশিক্ষণ বিমানের পাইলটসহ ১৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৬৪ জন। এর আগে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক  ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল এ ঘটনায় ১৯ জন নিহত হওয়ার তথ্য দেন।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সোমবার বেলা ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড্ডয়ন করে ও পরে বিধ্বস্ত হয়। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মাইলস্টোনের দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা পরিদর্শনের সময় ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, আজ বিমানবাহিনীর একটি এফ–সেভেন বিজেআই ফাইটার এয়ারক্র্যাফট আনুমানিক একটার দিকে আমাদের মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উত্তরা শাখার দোতলা স্কুল ভবনে ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করেছে।

এই দোতলা ভবনের প্রথম তলায় ছিল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বাচ্চাদের ক্লাস। দ্বিতীয় তলায় ছিল দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস। তার সাথে ছিল প্রিন্সিপালের (অধ্যক্ষের) অফিস মিটিং রুম। একটা কোচিংয়ের ক্লাস চলমান ছিল। ক্র্যাশ ল্যান্ডিং যখন হয়, তখন স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছিল এবং ওই সময় যে জায়গায় টিচার্স রুমের সাথে যে ল্যান্ডিং হয় ,আঘাত করে, ওই জায়গায় বাচ্চাকাচ্চারা জড়ো হয়েছিল এবং তাদের সাথে হয়তো কিছু অভিভাবকও ছিল।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মাইলস্টোন স্কুলের একটি ভবনের সামনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ভবনটি দোতলা। সেখানে পাঠদান করা হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী  বলেন, ভবনটির নাম প্রজেক্ট-২। ওই ভবনে দুটি তলা মিলিয়ে মোট ১৬টি ক্লাসরুম আছে। আর ৪টি শিক্ষকদের রুম। প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হতো এই ভবনে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শ্রেণিকক্ষের সামনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আরও জানিয়েছে, ভবনটিতে ছুটির পর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কোচিং করত।

ফায়ার ফার্ভিস আনুমানিক বেলা ১টা ৮ মিনিটে দুর্ঘটনার খবর পায় জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘দ্রুত আমাদের ইউনিট পৌঁছে যায় এবং উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। আমাদের মোট ৯টা ইউনিট এখানে কার্যক্রম করেছে। বর্তমানে আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ অবস্থায় আছে এবং আমরা উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

হতাহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত আমরা ১৯ জনের ডেড বডি উদ্ধার করেছি। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে আছে। এখানে সেনাবাহিনী এবং আমাদের ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ অন্যান্য সবাই মিলে আমাদের সহযোগিতা করেছে, আমাদের উদ্ধারকাজ চলমান আছে। উদ্ধারকাজ শেষ হলে আমরা টোটাল ক্ষয়ক্ষতির ফিগারটা আপনাদেরকে বলতে পারব।’

মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, ‘যারা নিহত, এখনো তাদের পরিচয় আমরা জানতে পারিনি, সময় লাগবে। আমাদের ধারণা, অধিকাংশই শিশু।’

এসময় মাইলস্টোন কলেজের সামনে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন। কলেজের বিধ্বস্ত ভবন থেকে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স বের হচ্ছে। এখন সেখান থেকে আহত মানুষদের জন্য রক্ত দেওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।

পরিস্থিতি দেখে  অবস্থা আরো আশঙ্কাজনক বলে মনে করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। অভিভাবক, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ নিহতের সংখ্যা  অর্ধশতাধিক ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারনা অনেকের।