Logo

আন্তর্জাতিক    >>   লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমনে সেনাদের কার কী দায়িত্ব?

লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমনে  সেনাদের কার কী দায়িত্ব?

লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমনে সেনাদের কার কী দায়িত্ব?

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান বিক্ষোভের মধ্যে সেখানে ফেডারেল কর্মী ও ফেডারেল সম্পদের নিরাপত্তায় চার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ও ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েন করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথমে লস অ্যাঞ্জেলেস ন্যাশনাল গার্ড সেনাদের মোতায়েন করেন। ন্যাশনাল গার্ড সেনারা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের অধীন থাকেন এবং অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা সেই অঙ্গরাজ্যগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

ন্যাশনাল গার্ড সেনারা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর রিজার্ভ সদস্য হওয়ায় তাঁরা সাধারণত খণ্ডকালীন সদস্য হন, অর্থাৎ সামরিক দায়িত্ব ছাড়াও তাঁদের অন্যান্য চাকরি বা পেশা থাকে। অন্যদিকে ইউএস মেরিনরা হলেন সক্রিয় দায়িত্বে নিয়োজিত সেনা। এটি তাঁদের পূর্ণকালীন পেশা।

মধ্যপ্রাচ্য থেকে আফ্রিকা—বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘাত মোকাবিলায় মেরিন সেনাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জরুরি পরিস্থিতিতে, যেমন বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোর ওপর হুমকি দেখা দিলে নিরাপত্তা জোরদারে দ্রুত মোতায়েনের জন্য তাঁদের ব্যবহার করা হয়। এসব সেনা একটি বিশেষ বাহিনীর অধীন মোতায়েন থাকবে, যার নাম টাস্ক ফোর্স ৫১।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন সংকলনের ‘টাইটেল ১০’ ধারার ভিত্তিতে ট্রাম্প ৭ জুন ক্যালিফোর্নিয়ার ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ফেডারেল দায়িত্ব পালনের জন্য ডেকে পাঠান। ‘টাইটেল ১০’ মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা নির্ধারণে ব্যবহৃত একটি ফেডারেল আইন।

টাইটেল ১০ -এর একটি ধারা সেকশন ১২৪০৬ প্রেসিডেন্টকে ন্যাশনাল গার্ড ইউনিটগুলোকে ফেডারেল দায়িত্বে মোতায়েনের অনুমতি দেয়। তবে এটা সেই ক্ষেত্রে যখন যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণ হয়, অথবা বিদ্রোহ বা বিদ্রোহের আশঙ্কা থাকে, অথবা যদি প্রেসিডেন্ট নিয়মিত সেনাবাহিনী দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইন কার্যকর করতে অসমর্থ হন।

প্রেসিডেন্টের কাছে কিছু সীমিত ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে মেরিন সেনার মতো সক্রিয় দায়িত্বে থাকা সেনা মোতায়েনের ক্ষমতাও রয়েছে। চার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনার বেশির ভাগই আসছেন ক্যালিফোর্নিয়া ন্যাশনাল গার্ড থেকে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়া ন্যাশনাল গার্ডের একটি ইউনিট ৭৯তম ইনফ্যানট্রি ব্রিগেড কমব্যাট টিমের ২ হাজার ১০০ জন সেনা মাঠে মোতায়েন রয়েছেন।

মেরিন সেনারা আসছেন প্রথম মেরিন ডিভিশনের দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নের সপ্তম মেরিন রেজিমেন্ট থেকে। তাঁদের ঘাঁটি টোয়েন্টিনাইন পামস, যা লস অ্যাঞ্জেলেসের কাছেই অবস্থিত।

লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন করা সেনাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল স্কট শেরম্যান। তিনি বলেছেন, ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সেনা উভয়ই একই ধরনের কাজ করবেন। ওই সেনা কর্মকর্তা আরও বলেন, তাঁদের ফেডারেল কর্মী ও ফেডারেল সম্পত্তি সুরক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হলো, তাঁরা আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) কর্মকর্তাদের অভিযানের সময় তাঁদের সঙ্গে থাকবেন।

ফেডারেল কর্মী বা সম্পত্তির জন্য যাঁরা হুমকি সৃষ্টি করে, তাঁদের আটক করতে সেনাদের অনুমোদন রয়েছে। তবে সেটা শুধু পুলিশ এসে তাঁদের গ্রেপ্তার করার আগপর্যন্ত। সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করার অনুমতি নেই।

দ্য পসে কোমিটাটাস অ্যাক্ট সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক আইন প্রয়োগে অংশ নিতে বাধা দেয়, যার মধ্যে ন্যাশনাল গার্ডও পড়ে। তবে ট্রাম্প আরও বিস্তৃত পদক্ষেপ হিসেবে ইনসারেকশন অ্যাক্ট প্রয়োগ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সেনাদের সরাসরি বেসামরিক আইন প্রয়োগে অংশগ্রহণের অনুমতি পাবেন।

ন্যাশনাল গার্ড সেনাদের ঢাল, লাঠি ও রাইফেল বহন করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি তাঁরা সাধারণ সুরক্ষামূলক সরঞ্জামও ব্যবহার করছেন। মেরিন সেনারাও দাঙ্গা প্রতিরোধের ঢাল ও লাঠি সঙ্গে রাখবেন। শেরম্যান বলেন, তাঁদের রাইফেলে গুলি থাকবে না, তবে তাঁরা সঙ্গে গুলি রাখবেন।