গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে বন্ধ হলো শেষ হাসপাতালের সেবা
- By Jamini Roy --
- 29 December, 2024
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসনের ফলে মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ইসরাইলি অভিযানের জেরে উত্তর গাজার শেষ হাসপাতাল কামাল আদওয়ান বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এক বিবৃতিতে জানায়, অবরোধ ও হামলার ফলে গাজার স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে।
ডব্লিউএইচওর বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলের স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। অবরোধের কারণে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও ওষুধের ঘাটতিতে চিকিৎসা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। গতকাল শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) হাসপাতালের পরিচালক ডা. হুসাম আবু সাফিয়াকে ইসরাইলি বাহিনী আটক করে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডব্লিউএইচও।
হাসপাতাল ফাঁকা হয়ে যাওয়ার কারণে এখন সেখানে কোনো চিকিৎসা সেবা চলছে না। স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ করার পরিবেশ নেই, কারণ ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় হাসপাতালগুলো কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
ডব্লিউএইচও আরও জানিয়েছে, পরিকল্পিতভাবে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধ্বংস করা হচ্ছে। ৮০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলা অবরোধে আটকা পড়া ৭৫ হাজার ফিলিস্তিনির জীবন চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। উত্তর গাজার কোনো হাসপাতাল এখন কার্যক্রম চালাতে পারছে না।
ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, শনিবার গাজা জুড়ে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা। আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঠিক চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গাজা থেকে ইসরাইলের জেরুজালেমের দিকে দুইটি দূরপাল্লার রকেট ছোড়া হয়েছে। ইসরাইল দাবি করেছে, তারা রকেটগুলো প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। তবে এ হামলায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, গাজার যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে তেল আবিবে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহু সরকারের যুদ্ধনীতি এবং গাজায় হামলার বিরোধিতা করেছে। তারা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের দাবি জানিয়েছে।
তেল আবিবের রাস্তায় ইসরাইলিদের এই বিক্ষোভ ইঙ্গিত দেয় যে ইসরাইলি জনগণের একটি অংশ যুদ্ধের নীতির বিপক্ষে। নেতানিয়াহুর সরকারকে চাপের মুখে ফেলতে এই বিক্ষোভগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
গাজার মানবিক সংকট অবসানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। হাসপাতালগুলো পুনরায় চালু করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই সংকট নিরসন সম্ভব। তবে এর জন্য আন্তর্জাতিক মহলের চাপ এবং ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন।