নিউইয়র্কে তোলপাড়: রোমান্টিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান—ভুয়া ICE এজেন্ট সেজে বাংলাদেশি এনওয়াইপিডি সার্জেন্ট গ্রেপ্তার
প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:
নিউইয়র্কে এক অভূতপূর্ব ঘটনার জেরে তোলপাড় শুরু হয়েছে বাংলাদেশি কমিউনিটি ও আইনশৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট মহলে। রোমান্টিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের জেরে প্রতিশোধ নিতে নিজেকে ICE–এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের (NYPD) সার্জেন্ট আতিকুল ইসলাম (২৯)–কে গ্রেপ্তার করেছে ফেডারেল এজেন্টরা। তিনি বাংলাদেশি-আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন (BAPA)–এর সদস্য বলেও জানা গেছে।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রুকলিনের সার্ভিস এরিয়া–৩–এ কর্মরত সার্জেন্ট আতিক অনলাইনে পরিচিত এক নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ তৈরি হলেও, ওই নারী তার রোমান্টিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। অভিযোগ অনুসারে, ডিউটির বাইরে থেকে তিনি একাধিকবার ফোন কল ও টেক্সট মেসেজে ওই নারীকে ভয় দেখান এবং দাবি করেন যে তিনি তার কুইন্সের বাসায় “ICE পাঠিয়ে দেবেন।” আরও বিস্ময়কর বিষয় হলো—তিনি নিজেকে ICE–এর ফিল্ড ডিরেক্টর ‘জেমস ডব্লিউ. অ্যান্ডারসন’ নাম ব্যবহার করে পরিচয় দিতেন এবং ওই নারী ও তার পরিবারকে “১৫ এপ্রিল ICE কার্যালয়ে রিপোর্ট করতে হবে” বলেও হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী নারী শঙ্কিত হয়ে বিষয়টি NYPD–এর ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করলে তদন্তে স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় যে সার্জেন্ট আতিকুল ইসলাম ইচ্ছাকৃতভাবে ফেডারেল কর্মকর্তা সেজে ভয় দেখিয়েছেন—যা যুক্তরাষ্ট্রের আইনে গুরুতর অপরাধ। NYPD বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে এবং পরে ফেডারেল এজেন্টরা ১৮ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার হওয়া আতিকুল ইসলামকে ব্রুকলিন ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক ট্যারিন মার্কেল–এর আদালতে হাজির করা হলে তিনি নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে আদালত তাকে ২৫ হাজার ডলারের ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দিলেও কঠোর শর্ত আরোপ করেন। বিচারকের আদেশ অনুযায়ী, আতিকুল ইসলাম ভুক্তভোগীর সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারবেন না এবং তার বাড়ির আশেপাশেও যেতে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবেন। সহকারী মার্কিন অ্যাটর্নি রেবেকা শুমান আদালতে এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপের আর্জি পেশ করেন।
আতিকুল ইসলামের আইনজীবী জন আরলিয়া জানান, NYPD ইতোমধ্যেই আতিকুল ইসলামের ব্যাজ ও সার্ভিস অস্ত্র জব্দ করেছে এবং তাকে বেতনসহ সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তার মতে, “মক্কেল অভিযোগগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।” আদালত চত্বরে উপস্থিত সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নেরই উত্তর দেননি আতিকুল ইসলাম।
ফেডারেল পরিচয়ে মিথ্যা পরিচয় দেওয়া প্রমাণিত হলে সার্জেন্ট আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ২০২৬ সালের ৬ জানুয়ারি। সূত্র: ঠিকানা নিউইয়র্ক

















