Logo

আন্তর্জাতিক    >>   জিম্মি মুক্তির আগে তেলআবিবে সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ: ট্রাম্পের প্রশংসায় ইসরায়েলিরা

জিম্মি মুক্তির আগে তেলআবিবে সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ: ট্রাম্পের প্রশংসায় ইসরায়েলিরা

জিম্মি মুক্তির আগে তেলআবিবে সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ: ট্রাম্পের প্রশংসায় ইসরায়েলিরা

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:

হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের সম্ভাব্য মুক্তির আগে তেলআবিবে এক সমাবেশে অংশ নিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। ওই সমাবেশে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, জিম্মিরা ঘরে ফিরে আসছেন। তিনি গাজা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের ফেরানোর বিষয়টিকে সম্ভব করে তোলায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন।

এদিকে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েলি সেনা সরে যাওয়ার পর গত দুই দিনে প্রায় ৫ লাখ মানুষ গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরে এসেছে।

অপরদিকে যুদ্ধ অবসানের সমঝোতা চূড়ান্ত করতে একটি শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছে মিশর। ট্রাম্পসহ প্রায় ২০ জন নেতা শার্ম আল-শেখে সোমবার ওই বৈঠকে অংশ নেবেন বলে মিশরের প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। এই সম্মেলনে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার বৈঠকে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে মিশরে যাওয়ার আগে ইসরায়েলে যাবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও জামাতা জেয়ার্ড কুশনারও শনিবারের সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন।

যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি সমঝোতার আওতায় ৪৮ জিম্মিকে মুক্তি দিতে হামাসকে সোমবার স্থানীয় সময় ১২টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিলো। ধারণা করা হচ্ছে, এর মধ্যে ২০ জন জীবিত রয়েছেন। বাকিদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা ওসামা হামদান এএফপিকে বলেন, সমঝোতা অনুযায়ী সোমবার সকালে বন্দি বিনিময় শুরু হবে। আভিভ হাভরনের পরিবারের সদস্যদের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে হামাসের হামলার সময় হত্যা করা হয়েছিল। তার পরিবারের ৭ জনকে অপহরণ করা হয়েছিল।

তেলআবিবে বিবিসিকে তিনি বলেন, এটা কমিউনিটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে তারা ফিরে আসছে। এটা ছাড়া আমরা আমাদের জীবন আবার শুরু করতে পারি না। আমার বোনেরা ও দুই ভগ্নীপতি খুন হয়েছে। পরিবারের ৭ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। আমার বড় বোন, তার মেয়ে এবং নাতিকে অপহরণ করা হয়েছে। কমিউনিটির চারজনের মৃতদেহ এখনো গাজায়।

শুলামিট ও ডেভিড গিনাট বলছেন, সব জিম্মিদের অবশ্যই রক্ষা করা দরকার। তারা আমাদের ভাই ও বোন। আমরা ক্ষত কাটিয়ে ওঠতে চাই। আমরা যুদ্ধ বন্ধ করে ক্ষত উপশম করতে চাই।

তেলআবিবের সমাবেশে অংশ নেওয়া অনেকে বলেছেন, ধন্যবাদ, ট্রাম্প'। অপরদিকে গাজায় ইসরায়েলি সেনারা যেসব এলাকা ছেড়ে গেছে, সেখানকার নিয়ন্ত্রণের জন্য হামাস তাদের যোদ্ধাদের মোতায়েন করেছে।

অবশ্য কে গাজা শাসন করবে- এই অনিশ্চয়তা ও অভ্যন্তরীণ সহিংসতার আশংকার মধ্যে এটাই প্রত্যাশিত ছিল। হামাস ও গাজার কিছু গোষ্ঠীর মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ঘরবাড়ি হারানো ফিলিস্তিনিরা গাজার উত্তর দিকে আসা অব্যাহত রেখেছে। অনেকেই এসে তাদের ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপ দেখছেন।

এখানে আর কোনো ঘর নেই। সব শেষ। গাজা থেকে এমনটাই বলছিলেন আইনজীবী মোসা আলদৌস। রাজা সালমি নামে একজন এএফপিকে বলেন তার সব স্মৃতি ধূলায় মিশে গেছে।

যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি সমঝোতা অনুযায়ী, গাজায় আরও ত্রাণবাহী লরি যাওয়ার কথা। কিন্তু বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, বিপুল সংখ্যায় ত্রাণবাহী লরি এখনো গাজায় প্রবেশ করেনি।

সংস্থাটি বলছে, তাদের লক্ষ্য শহরজুড়ে ১৪৫টি জায়গায় নিয়মিত খাদ্য বিতরণ আবার শুরু করা। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, বৃহস্পতিবার ৫০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করেছে। জাতিসংঘের মতে, গাজার প্রায় ৫ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্যে আছে। তবে ইসরায়েল এসব প্রত্যাখ্যান করেছে। নেতানিয়াহু বলেছেন, কোথাও ক্ষুধা দেখা গেলে তার দায় সাহায্য সংস্থা ও হামাসের। সূত্র: বিবিসি