
শেখ হাসিনাকে দেওয়া ডক্টরেট ডিগ্রি পুনর্বিবেচনা করছে অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়
- By N/A --
- 22 April, 2025
প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও গুমের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে।সেই কারণে শেখ হাসিনাকে দেওয়া সম্মানসূচক আইন ডিগ্রির বিষয়টি পর্যালোচনা করছে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এএনইউ)। অর্থাৎ, তাকে দেওয়া ডিগ্রিটি বহাল থাকবে কি থাকবে না তা নিয়ে ভাবছে এএনইউ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে শেখ হাসিনাকে দেওয়া সম্মানসূচক আইন ডিগ্রি নিয়ে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি কমিটি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তারা এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডিগ্রি প্রত্যাহারের ব্যাপারে তারা বড় পরিসরের একটি নীতিমালা তৈরি করার কাজ করছে, যেটির ভিত্তিতে ভবিষ্যতেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এএনইউ যদি সত্যিই শেখ হাসিনার সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রত্যাহার করে, তবে তা একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হবে যা ভবিষ্যতের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
এএনইউয়ের এর একজন মুখপাত্র অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে (এএপি) বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এমন ডিগ্রি প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটেনি ও এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কোনো সুস্পষ্ট প্রক্রিয়াও বিদ্যমান নেই। এখন আমরা একটি স্পষ্ট ‘প্রত্যাহার নীতি’ তৈরি করছি, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতেও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
এএনইউয়ের এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো, যখন বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের কাছে ভারতে অবস্থানরত হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ জানিয়েছে।
এর আগে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে আন্দোলন দমনে চালানো অভিযানে ১ হাজার জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অভিযোগ তোলে, কারফিউ জারি করার পর সেনাবাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ‘দেখামাত্রই গুলি করার’ নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
অভ্যুত্থান চলাকালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে তার বাহিনীর বর্বরতা থামাতে চাপ দিতে হবে। সেই সঙ্গে অস্ত্রহীন ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংসতা চালানোর দায় সেনাবাহিনীকে নিতে হবে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। সূত্র: ক্যানবেরা টাইমস