
প্রতিদিন গড়ে এক শিশুর মৃত্যু ভূমধ্যসাগরে
Progga News Desk:
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে আফ্রিকার দেশগুলো থেকে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। এতে প্রায়ই ঘটে হতাতের ঘটনা। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অধিকাংশই থাকে নারী ও শিশু। গত এক দশকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছানোর চেষ্টারত সাড়ে তিন হাজার শিশু মারা গেছে অথবা নিখোঁজ হয়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এই তথ্য জানিয়েছে।
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে আফ্রিকার দেশগুলো থেকে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। এতে প্রায়ই ঘটে হতাতের ঘটনা। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অধিকাংশই থাকে নারী ও শিশু।
গত এক দশকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছানোর চেষ্টারত সাড়ে তিন হাজার শিশু মারা গেছে অথবা নিখোঁজ হয়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে দেখা যাচ্ছে, গড়ে প্রতিদিন একজন শিশু ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে অথবা নিখোঁজ হয়েছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, মৃত বা নিখোঁজ শিশুর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম জানিয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ২২ হাজার মানুষ মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।
আর তাই উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ইতালি পর্যন্ত বিস্তৃত সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় সমুদ্রপথটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিবাসন রুট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই অভিবাসন রুটের প্রতি ছয় জন অভিবাসীর মধ্যে একজন শিশু বলেও জানিয়েছে ইউনিসেফ। এসব শিশুদের বেশিরভাগই অভিভাবকবিহীন ও তারা একাই এই ভয়াল সমুদ্র পাড়ি দেয়।
এই অভিবাসন রুটের প্রতি ছয় জন অভিবাসীর মধ্যে একজন শিশু বলেও জানিয়েছে ইউনিসেফ। এসব শিশুদের বেশিরভাগই অভিভাবকবিহীন ও তারা একাই এই ভয়াল সমুদ্র পাড়ি দেয়।
সংস্থাটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুট পাড়ি দেওয়ার চেষ্টারত প্রতি ১০ জন শিশু ও তরুণের মধ্যে অন্তত সাত জন নানাভাবে শোষণের শিকার হয়েছেন। এসব শিশুদের সহিংসতা, নির্যাতন, যৌন শোষণ, জোরপূর্বক শ্রম, বাল্যবিবাহ এবং বন্দিদশার মতো ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
ইউনিসেফ তাদের প্রতিবেদনে ২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল অভিবাসীবাহী একটি নৌকাডুবির কথা তুলে ধরেছে। ওই নৌকাডুবির ঘটনায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।
ইউনিসেফ-এর ইউরোপ ও সেন্ট্রাল এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক এবং ইউরোপমুখী শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক বিশেষ সমন্বয়কারী রেজিনা দে দমিনিচিস বলেন, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সব দেশের সরকারকে অবশ্যই শিশুদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শিশু অধিকার সনদে অন্তর্ভুক্ত অধিকারগুলো শুধু সীমান্ত বা উপকূলেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং শিশুরা যখন সীমান্ত অতিক্রম করে তখনও তাদের অধিকার সুরক্ষিত থাকা উচিত।
এদিকে ইতালির কট্টর ডানপন্থি সরকারের প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নিয়েছেন নানা উদ্যোগ।
ইউরোপমুখী অভিবাসীদের একটি বড় অংশ উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়া ও লিবিয়ার উপকূল থেকেই ভাগ্য বদলের আশায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে থাকেন। তাদের বেশিরভাগেরই লক্ষ্য থাকে ইতালি পৌঁছানো। আর সেই দুটি দেশের সঙ্গেই চুক্তি রয়েছে ইতালির। চুক্তির আওতায় অভিবাসীদের যাত্রা ঠেকাতে কাজ করে দেশ দুটির প্রশাসন। বিনিময়ে তাদের অর্থ সহায়তা দিয়ে আসছে ইতালি।
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছরের শুরু থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১১ হাজার ৮০৫ জন অভিবাসী দেশটির উপকূলে পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে এক হাজার ৫৮৮ জন ছিলেন অভিভাবকবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক।
২০২৪ সালেও ইতালি পৌঁছেছে আট হাজার ৪৩ জন অভিভাবকবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক। ২০২৩ সালে সংখ্যাটি ছিল ১৮ হাজার ৮২০। সূত্র: ডয়েচে ভেলে