নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে বাংলাদেশে মিনি ল্যাব চালু
- By Jamini Roy --
- 31 December, 2024
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় চালু হওয়া মিনি ল্যাবরেটরি। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এই ল্যাবরেটরির উদ্বোধন করেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে এই ল্যাবরেটরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা চাই, খাদ্যের কারণে যেন কারো স্বাস্থ্যের ক্ষতি না হয়।"
নতুন এই ল্যাবরেটরি খাদ্যে ভেজাল এবং ক্ষতিকর উপাদান শনাক্তে অত্যাধুনিক পরীক্ষা চালাবে। নিম্নলিখিত কাজগুলো এখানে করা সম্ভব:
- শুঁটকি মাছে কীটনাশকের উপস্থিতি নির্ণয়।
- শাকসবজি ও ফলে বালাইনাশকের উপস্থিতি ও মাত্রা নির্ধারণ।
- পাউরুটিতে ক্ষতিকর পটাসিয়াম ব্রোমেট শনাক্ত।
- খাদ্যদ্রব্যে ভারী ধাতু বা হেভি মেটাল নির্ণয়।
- দুধে অ্যান্টিবায়োটিক রেসিডিউ পরীক্ষা।
- মধুতে টক্সিক উপাদানের উপস্থিতি নির্ধারণ।
- খাদ্যে কৃত্রিম রঙ এবং ভেজাল শনাক্ত।
- পানিতে বিদ্যমান মিনারেলের মাত্রা নির্ণয়।
- শিশুখাদ্যে ল্যাকটোজেন এবং অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান শনাক্ত।
এছাড়াও, খাদ্যে ব্যাকটেরিয়া, যেমন সালমোনেলা এবং কলিফর্মের উপস্থিতি নির্ধারণ সম্ভব। এই কার্যক্রম দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খাদ্য উপদেষ্টা বিএফএসএর মোবাইল ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, দেশে আটটি বিভাগে আটটি মোবাইল ল্যাব রয়েছে। এই ল্যাবরেটরিগুলো মাঠ পর্যায়ে কাজ করে, যেখানে সরাসরি খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ এবং তৎক্ষণাৎ পরীক্ষা করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার আরও বলেন, "নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইন প্রয়োগের ওপর জোর দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এ বিষয়ে সক্রিয় হতে হবে।" তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই ল্যাব ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যে ভেজাল রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়ার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান। তারা মিনি ল্যাবের কার্যক্রম সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন এবং খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
মিনি ল্যাব চালুর মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের পথ আরও সুগম হলো। খাদ্যপণ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর উপাদান শনাক্তে এই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সরকার আশা করছে, নিরাপদ খাদ্যের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রচেষ্টা আরও শক্তিশালী হবে।