Logo

ইউএসএ নিউজ    >>   নাগরিকত্বের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল দাসপ্রথার শিকার শিশুদের জন্য, ধনীদের জন্য নয়:ডোনাল্ড ট্রাম্প

নাগরিকত্বের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল দাসপ্রথার শিকার শিশুদের জন্য, ধনীদের জন্য নয়:ডোনাল্ড ট্রাম্প

নাগরিকত্বের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল দাসপ্রথার শিকার শিশুদের জন্য, ধনীদের জন্য নয়:ডোনাল্ড ট্রাম্প

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, জন্মসূত্রে আমেরিকান নাগরিকত্বের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল দাসপ্রথার শিকার  শিশুদের জন্য, ধনীদের শিশুদের জন্য নয়। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রাপ্তির সাংবিধানিক বিধানটি মূলত দাসপ্রথার শিকার মানুষের শিশুদের জন্য তৈরি হয়েছিল, ধনী বিদেশিদের পুরো পরিবারকে নাগরিক বানানোর উপায় বা উদ্দেশ্য হিসেবে নয়।

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে বহুদিনের বিতর্কের প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের পরই এ মন্তব্য করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চলতি মাসের ৫ তারিখে বিতর্কটি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানির আদেশ দিয়েছেন আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট।

আমেরিকান সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মি. ট্রাম্প তার প্রশাসনের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ববিরোধী নির্বাহী আদেশের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। বলেন, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা হারলে তা হবে ‘ধ্বংসাত্মক’। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ, অনেক বিদেশি নারী যুক্তরাষ্ট্রে শুধু সন্তান জন্ম দিতে আসেন, যাতে শিশুটি নাগরিকত্ব পায় ও পরে পুরো পরিবার সেই সুবিধা নিতে পারে।

মি. ট্রাম্প বলেন, এই মামলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মূলত দাসপ্রথার শিকার মায়ের শিশুদের জন্য তৈরি হয়েছিল। তারিখগুলো দেখলেই বোঝা যায় যে বিষয়টি গৃহযুদ্ধের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। কোনো ধনী বিদেশি দেশে এসে পা রাখলো, আর হঠাৎ তার পুরো পরিবার আমেরিকান নাগরিক হয়ে গেলো- এ উদ্দেশ্যে এই আইন করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আইনটি ভালো কারণেই করা হয়েছিল ও বিষয়টি এখন মানুষ বুঝতে শুরু করেছে। আদালতে বুঝতে পারছে। আমরা যদি এই মামলায় হেরে যাই, তাহলে তা হবে বিধ্বংসী। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সুযোগ নিয়ে দেশে আসা লাখেরও বেশি মানুষের দায় নেওয়া সম্ভব নয়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সেইসব শিশুদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি বাতিল করেন, যাদের মা-বাবা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন অথবা সাময়িক ভ্রমণে এসেছেন। দীর্ঘদিনের এই নীতিগত পরিবর্তন আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলে কয়েকটি ফেডারেল (কেন্দ্রীয়) আদালত তা সাময়িকভাবে স্থগিত করেন।

চলতি বছরের জুনে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে ফেডারেল জেলা আদালতগুলো দেশব্যাপী বা সার্বিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষমতা রাখে না। পরে ৫ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি আপিল গ্রহণ করে পুরো বিতর্ক নিয়ে শুনানির সিদ্ধান্ত নেন।

সংবিধান অনুযায়ী, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পেতে হলে শিশুকে যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে জন্মগ্রহণ করতে হবে ও তার মা-বাবাকে যুক্তরাষ্ট্রের এখতিয়ারের (জুরিসডিকশন) আওতায় থাকতে হবে। তবে আদালতে উভয় পক্ষই দ্বিতীয় শর্তটির ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছে। কে কখন ‘যুক্তরাষ্ট্রের এখতিয়ারের’ আওতায় পড়বে, সেটিই এখন বিতর্কের মূল বিষয়।

 জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আসলে কী?

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী (১৮৬৮) অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যে কাউকে নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টেও একই ধরনের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, এই সংখ্যা এখন আরও বেড়ে ১ কোটি ৩০ থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ হতে পারে। সূত্র: সিএনবিসি, এনডিটিভি, জাগোনিউজ