কানাডার ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্য
- By Jamini Roy --
- 07 January, 2025
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একবার নয়, বেশ কয়েকবার কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সর্বশেষ সোমবার (৬ জানুয়ারি) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এ বিষয়ে পোস্ট করে বিতর্কের সৃষ্টি করেন তিনি।
ট্রাম্পের মন্তব্য আসে এমন এক সময়, যখন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং সমালোচনার মুখে প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের প্রধানের পদ থেকে ইস্তফার ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণা আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।
নিজের পোস্টে ট্রাম্প বলেন,
“কানাডার অনেকেই আমাদের ৫১তম রাজ্য হতে পছন্দ করে। কানাডাকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি এবং ভর্তুকির চাপ যুক্তরাষ্ট্র আর সহ্য করবে না। জাস্টিন ট্রুডো এটা জানতেন এবং তাই তিনি পদত্যাগ করেছেন।”
ট্রাম্প আরও বলেন,
“যদি কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত হয়, তাহলে কোনো শুল্ক থাকবে না, কর অনেকটাই কমে যাবে এবং কানাডার নাগরিকরা রাশিয়ান ও চীনা জাহাজের হুমকি থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে। একসঙ্গে আমরা একটি মহান জাতি হতে পারি!”
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর কানাডার সরকার বা অন্য কোনো প্রতিনিধির পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে কানাডার দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে অবৈধ মাদক এবং অভিবাসীদের প্রবেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। এই সমস্যা সমাধানে অটোয়ার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
এর আগে ১৮ ডিসেম্বর, ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছিলেন,
“কেউ উত্তর দিতে পারে না যে, কেন আমরা কানাডাকে বছরে ১০ কোটি ডলারেরও বেশি ভর্তুকি দেই? অনেক কানাডিয়ান চান কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাক। এটি কর ও সামরিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে অনেক খরচ বাঁচাবে। আমি মনে করি এটি একটি দারুণ ধারণা। ৫১তম অঙ্গরাজ্য!!!”
ট্রাম্প আরও দাবি করেন, কানাডার অনেক নাগরিকও এটি সমর্থন করেন। তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে যুক্তরাষ্ট্রের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দেন।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কানাডা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কাছের বাণিজ্যিক অংশীদার এবং ন্যাটো জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
এদিকে, ট্রুডোর পদত্যাগ এবং কানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করে ট্রাম্পের এই বক্তব্য আরও বেশি বিতর্কিত হয়ে উঠেছে। কানাডার নাগরিকরা কীভাবে এই প্রস্তাব গ্রহণ করবে এবং উত্তর আমেরিকার ভূ-রাজনীতিতে এটি কী প্রভাব ফেলবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই বক্তব্য হয়তো কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে, যা তার নতুন প্রশাসনের অন্যতম বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হতে পারে।