ব্যাংক একীভূতকরণে নতুন চিন্তা: বাংলাদেশ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
- By Jamini Roy --
- 07 January, 2025
বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক একীভূতকরণের বিষয়ে নতুন করে চিন্তা করার পরিকল্পনা করছে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, "এ বিষয়ে আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ভবিষ্যতে প্রাসঙ্গিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।"
হুসনে আরা শিখা জানান, টাকা-রুপি লেনদেন প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সফল লেনদেন হয়নি। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ের চেয়ে প্রথমে এর সঠিক পরিমাণ নির্ধারণে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, "ডলার নিয়ে যারা কারসাজি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।"
গত বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক একীভূতকরণ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করেছিল। ওই নীতিমালায় দুর্বল আর্থিক অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলোকে একীভূতকরণে উৎসাহিত করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যাংক নিজ থেকে একীভূত হতে রাজি না হয়, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর করবে।
নীতিমালা অনুসারে, ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হবে:
১. প্রথম ধাপ: দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত হতে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষর করবে।
২. দ্বিতীয় ধাপ: আমানতকারী, পাওনাদার এবং বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরতের পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে হবে।
৩. তৃতীয় ধাপ: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বহিঃনিরীক্ষকের মাধ্যমে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা হবে।
৪. চূড়ান্ত ধাপ: একীভূতকরণের অনুমোদনের জন্য আদালতে আবেদন জমা দিতে হবে।
যে সব ব্যাংক মূলধন ঘাটতি, তারল্য সংকট, উচ্চ খেলাপি ঋণ, বা সুশাসনের অভাবে পিসিএ (Prompt Corrective Action) ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় পড়বে, তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশিকা মেনে পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হলে, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বাধ্যতামূলকভাবে একীভূত করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করেছে যে, একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সুশৃঙ্খল ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আপাতত একীভূতকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিলেও, পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতে আরও কার্যকর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কথা ভাবা হচ্ছে।
এই উদ্যোগ দেশের ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা এবং আর্থিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।