বিএনপির ২,২৭৬ নেতাকর্মী হত্যার অভিযোগ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে
- By Jamini Roy --
- 09 January, 2025
বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ২,২৭৬ জন নেতাকর্মীকে হত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছে দলটি। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বিএনপির মামলা ও তথ্যবিষয়ক প্রতিনিধি দলের তিন সদস্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে মামলাটি দাখিল করেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত একটি চিঠি অভিযোগের অংশ হিসেবে জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশের জেলা, উপজেলা, মহানগর ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্রসফায়ার ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভিযোগ হলো ইলিয়াস আলীসহ বিএনপির অনেক শীর্ষ নেতার ক্রসফায়ারে মৃত্যু। এছাড়া ১৫৩ জন নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগ এখনও নিখোঁজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই দীর্ঘ সময়ে দলটির ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের মাত্রা বেড়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে, রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে নেতাকর্মীদের ক্রসফায়ারে হত্যা এবং গুম করা হয়েছে। এই ঘটনা কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকলাপ নয়, বরং তা মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ।
মামলার তথ্য অনুসারে, ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সারা দেশে সংঘটিত এ ধরনের ঘটনা দলীয় নেতাকর্মীদের আতঙ্কিত করেছে। অভিযোগপত্রে নিহতদের পরিচয়, স্থান এবং সময় উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অভিযোগটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে জমা দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং গুম, খুন, মামলা বিষয়ক সমন্বয়ক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তিনি জানান, ইলিয়াস আলি ও অন্যান্য নেতার হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনতে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রমাণ দাখিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন,
"২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ২,২৭৬ জনকে ক্রসফায়ারে হত্যা ও ১৫৩ জনকে গুম করা হয়েছে। এসব অভিযোগ আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেছি।"
বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে গুম ও হত্যা অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময়ে এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিএনপি এই ঘটনাগুলোকে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছে।
বিএনপির এই অভিযোগ দাখিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।