বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নিপীড়নের ভয়াবহ ঘটনা তিনদিনে একাধিক হামলা
- By N/A --
- 26 January, 2025
২৩-২৫ জানুয়ারি ২০২৫, বাংলাদেশ: হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নৃশংস অপরাধের একের পর এক ঘটনায় চিন্তা বাড়িয়েছে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলে। গত তিনদিনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনায় প্রাণহানি, ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, অপহরণ, খুন, লুটতরাজ ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়।
১. হাজারীবাগে স্বর্ণ ব্যবসায়ী গুলি করে ছিনতাই: ২৩ জানুয়ারি, রাত ১১টার দিকে রাজধানীর হাজারীবাগ সেকশন এলাকায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা জুয়েলারি ব্যবসায়ী সজল রাজবংশী (৩৭) কে গুলি করে ৭০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই করেছে। সজল মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন, তখন দুজন মোটরসাইকেলে ৭-৮ জন দুর্বৃত্ত তার পথ আটকায় এবং তাকে গুলি করে স্বর্ণের ব্যাগ ছিনতাই করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
২. খুলনায় হত্যাকাণ্ড ও মন্দিরে হামলা: ২৪ জানুয়ারি, রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা মহানগরীর তেঁতুলতলা মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তরা অর্ণব কুমার সরকার নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে। অর্ণব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর (এমবিএ) শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি, খুলনার শীতলা মন্দিরে হামলা চালানো হয় এবং মন্দিরের দানের টাকা লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
৩. গাইবান্ধায় কিশোরীর অপহরণ:গাইবান্ধায় অপহরণ, ৩ মাসেও উদ্ধার হয়নি তৃষ্ণা রাণী গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় ১৬ বছরের কিশোরী তৃষ্ণা রাণী সরকার ১১ নভেম্বর অপহৃত হন। দীর্ঘ তিন মাস পরেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। অপহরণকারীরা তাকে বিদেশে পাচারের আশঙ্কা রয়েছে বলে তার পরিবার জানিয়েছে। তৃষ্ণার বাবা-মা এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন যে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়েছে।
৪. মন্দির ভাঙচুর ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর প্রতি আক্রমণ: ২৪ জানুয়ারি, কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর সরারচর গ্রামে প্রায় ১৫০ বছর পুরনো মনসা মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, টাঙ্গাইল জেলার তারটিয়ায় সরস্বতী প্রতিমা ভাঙচুরের শিকার হয়েছে। এর পাশাপাশি, কুতুবপুর, সখিপুর, টাঙ্গাইল এলাকায় হিন্দুদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও দখল চলছে, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে।
৫. সাতক্ষীরা জেলার এক যুবককে হত্যা: ২৫ জানুয়ারি, সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের নিরঞ্জন সরকারের একমাত্র ছেলে অনিমেষ সরকারকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পুলিশ এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে, কিন্তু এখনও কোনও আসামি গ্রেফতার হয়নি।
৬. হিন্দুদের বাড়ি ভাঙচুর ও দখল: টাঙ্গাইল জেলার কুতুবপুর ও সখিপুর এলাকায় হিন্দুদের বাড়ি ভাঙচুর ও দখলের ঘটনা ঘটছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এসব ঘটনার মাধ্যমে সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে গেছে।
স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অনেক হামলা, লুটপাট, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে যা এখনও চলমান। সংখ্যালঘুদের মৌলিক দাবি নিয়ে সমাবেশ করায় সম্মিলিত সনাতনী জোটের চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ অনেকের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ সহ অন্যান্য মিথ্যা মামলায় আসামি বানানো হয়েছে এবং তাদের পক্ষে যে আইনজীবীরা দাঁড়িয়েছে তাদের নামেও মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।