তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার শুনানি রবিবার
- By Jamini Roy --
- 18 January, 2025
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রোববার (১৯ জানুয়ারি) শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এটি কার্যতালিকার ১৩ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।
গত ১ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন। এটি রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক ও আইনি লড়াই চলছে।
রিভিউ আবেদনকারীদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত থাকবেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানিতে অংশ নেবেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এই রিভিউ আবেদনটি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে গত ১৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয়। একইসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও পৃথকভাবে আবেদন করেছেন।
রিভিউ আবেদনের মূল উদ্দেশ্য হলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের জন্য সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা। ২০১১ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। এরপর থেকেই এ সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক চলমান।
আবেদনে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করলে তা রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসন এবং জনগণের মধ্যে আস্থা ফেরাতে ভূমিকা রাখবে।
এই শুনানিতে আদালতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের আইনি ও সাংবিধানিক দিকগুলো, রাজনৈতিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা এবং জনগণের স্বার্থের বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রিভিউ শুনানির রায় শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা দেবে।
২০১১ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্তকে সঠিক দাবি করলেও অনেক রাজনৈতিক দল এবং সংগঠন এটি সংবিধানের ভারসাম্যহীনতার কারণ হিসেবে দেখছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা সময়ে বিক্ষোভ ও বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
এই শুনানির রায় কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে। আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্কে একটি সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা আসবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।