বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মধ্যে বৈঠক, নির্বাচনের জন্য ঐকমত্য

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুও উপস্থিত ছিলেন। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়, যা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলেছে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের বিষয়ে আমাদের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে।” এছাড়াও তিনি আরও জানান, বৈঠকে দশটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি রেজাউল করিম জানান, "রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলমান থাকবে এবং নির্বাচনের বিষয়েও বিএনপির সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।"

বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো ছিল:

১. জাতীয় ঐক্য গঠন: আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ, এবং সাম্রাজ্যবাদমুক্ত স্বাধীন, সার্বভৌম, টেকসই গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গঠন।

২. দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রম: দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা।

৩. মানবাধিকার রক্ষা: ভোটাধিকারসহ সকল মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য গঠন।

৪. নির্বাচনী সংস্কার: ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা।

৫. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং সকল অধিকারবঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা।

৬. আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য: আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তি দেশ পুনর্গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।

৭. ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্য: ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে আঘাত করে কথা বলবে না এবং ভবিষ্যতে কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে ব্যাপারে রাজনৈতিক ঐক্য বজায় রাখা।

৮. ইসলামী শরিয়াহ রক্ষা: ইসলামি শরিয়াহবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়া এবং ইসলামবিরোধী কোনো বক্তব্য প্রদান না করার প্রতিশ্রুতি।

৯. প্রশাসনে পরিবর্তন: প্রশাসনে বর্তমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ।

এই বৈঠকের মাধ্যমে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মধ্যে নির্বাচনী বিষয় এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে, ২১ জানুয়ারি বরিশালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের (চরমোনাই পীর) সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।