ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে সংঘটিত সংঘর্ষে পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারসেল ব্যবহার করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঠেকিয়েছে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির বৈঠক শেষে ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, "পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, আজকের মধ্যেই পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে।"
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের কলেজগুলোতে ভর্তির আসন কমানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সমস্যার সূত্রপাত ঘটে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যাপক মামুন আহমেদ ও কয়েকজন শিক্ষক প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে কথা না বলে বের করে দেন এবং তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে ঢাবির সহ-উপাচার্যের বাসভবনের দিকে রওনা দেন। নীলক্ষেত মোড়ে পৌঁছালে মিছিলটি ঢাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুখোমুখি হয়, যা মুহূর্তেই উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়।
উত্তেজনা থেকে শুরু হওয়া ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। দুই পক্ষই ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। সংঘর্ষ রাত ৩টা পর্যন্ত কয়েক দফায় চলে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
ডিএমপি কমিশনার জানান, "পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাউন্ড গ্রেনেড এবং টিয়ারসেল ব্যবহার করা হয়েছে। না হলে এই সংঘর্ষ আরও ভয়াবহ হতে পারত।"
পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "আজকের মধ্যেই সবকিছু স্বাভাবিক হবে এবং ভালো সমাধান আসবে।"
এই ঘটনার প্রভাব শুধু শিক্ষার্থী মহলেই নয়, সারা সমাজে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নেবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এদিকে পরিস্থিতি যাতে আর উত্তপ্ত না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।