আন্দোলনে আহতদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র ও ইসির সংস্কার প্রস্তাব
- By Jamini Roy --
- 21 January, 2025
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহতদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে দ্রুত এনআইডি প্রদান করা হবে। তিনি মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় আহত হয়ে যারা চোখ ও আঙ্গুলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দ্রুত হস্তান্তরের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে হাসপাতালগুলোর বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ায় আহতদের ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু হয়েছে।
এএসএম হুমায়ুন কবির জানান, দেড় সপ্তাহের মধ্যেই আন্দোলনে আহতদের হাতে এনআইডি পৌঁছে দেওয়া হবে। এ প্রক্রিয়ায় নতুন ভোটার নিবন্ধনের পাশাপাশি আহতরা স্মার্ট কার্ড এবং ভুল সংশোধনের সুযোগও পাবেন। শুধু আহত ব্যক্তিরাই নয়, তাদের পরিবারের সদস্যরাও এ সুবিধা পাবেন।
সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন আন্দোলনে আহতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ইসি আশা করছে, এই উদ্যোগ জনগণের আস্থা বাড়াবে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে দেয়া প্রস্তাব এবং তা বাস্তবায়নের করণীয় নিয়ে আরএফইডি সদস্যদের সাথে আলোচনা করেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। তিনি জানান, কোনো গোপন উদ্দেশ্য নয় বরং নির্বাচনী অঙ্গনকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
বদিউল আলম বলেন, কাউকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য নয় বরং একটি সুষ্ঠু ও জবাবদিহিমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা তৈরির জন্য সংস্কার প্রস্তাব আনা হয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হয়নি; বরং কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য নতুন প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
সংস্কার প্রস্তাবে ফেরারি আসামি, বিচারিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি, গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত এবং অর্থপাচারকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বদিউল আলম বলেন, হত্যাকারী ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের ভোটে অংশ নেয়ার সুযোগ থাকা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, “যারা দেড় হাজার মানুষ হত্যা করেছে, গুম করেছে বা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তাদের নির্বাচনের বাইরে রাখতে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তাব আনা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধীরা ক্ষমতায় ফিরে গেলে দেশের সুশাসন এবং মানবাধিকারের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
নির্বাচন কমিশনকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা গেলে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন বদিউল আলম। তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা গেলে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব।"
বদিউল আলম আরও জানান, প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ হবে এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।
দেশের অধিকাংশ মানুষ চায় না যে, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী এবং দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিরা আবার ক্ষমতায় ফিরে আসুক। তাদের বাইরে রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রস্তাবটি বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এই উদ্যোগগুলো জনগণের স্বার্থ রক্ষায় নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা প্রকাশ করে।