১০ বছর পর পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলার পুনরায় তদন্ত শুরু
- By Jamini Roy --
- 31 December, 2024
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ১০ বছর আগে নিষ্পত্তি হওয়া পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলার পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মামলায় সাবেক সচিব মোশারেফ হোসেন ভুইয়াসহ সাতজনের বিরুদ্ধে নতুন করে অনুসন্ধান শুরু হবে। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক সভায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
তিনি জানান, দুদক এখন পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার ব্যাপারে অধিকতর অনুসন্ধান করবে। তাছাড়া, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মালিক দিলীপ কুমার আগারওয়ালের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান করা হবে। আক্তার হোসেন আরও বলেন, "ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্মাণ কাজের জন্য এসএনসি-লাভালিন ইন্টারন্যাশনাল ইনক-কে কার্যাদেশ পাইয়ে দেয়ার অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।"
২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় (মামলা নং ১৯) এই মামলার এজাহার দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে মোট সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়। এই সাতজনের মধ্যে সেতু বিভাগের তৎকালীন সচিব মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস, সাবেক সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইপিসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা, কানাডীয় প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ এবং সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন।
২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, দেড় বছরের বেশি সময় তদন্তের পর, দুদক মামলাটি থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেয়, যা ১৭ সেপ্টেম্বর আদালত গ্রহণ করে। ওই সময়ের দুদক চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান জানিয়েছিলেন, “এই মামলা ছিল দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের মামলা। তদন্তের সময় আমরা অনেক তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছি, কিন্তু বিশ্বব্যাংক ও কানাডা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এজন্য মামলাটি থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।”
পদ্মা সেতু দুর্নীতির এই মামলা ছিল একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মামলা, যেখানে কানাডা ও বাংলাদেশে তদন্ত চালানো হয়। দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের আশ্বাসের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে প্রমাণের অভাবে তা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
তবে, ১০ বছর পর এ মামলার পুনঃতদন্তের মাধ্যমে দুদক নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এই মামলার শেষ রায় ঘোষণা করতে চায়। এটি দেশব্যাপী আলোচনার সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ওপর বহুমুখী নজরদারি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।