রাশিয়া-ইউক্রেন বন্দি বিনিময়ে ৩০০ জনের বেশি মুক্তি পেলেন
- By Jamini Roy --
- 31 December, 2024
নতুন বছর শুরুর প্রাক্কালে রাশিয়া এবং ইউক্রেন তিন শতাধিক বন্দি বিনিময় করেছে। এ বন্দি বিনিময়ের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০০ জনেরও বেশি যুদ্ধবন্দিকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন একে অপরের কাছে হস্তান্তর করেছে। উভয় দেশ জানিয়েছে, বিনিময় প্রক্রিয়া ২০২৪ সালের প্রথম দিনটির আগের দিন ৩০ ডিসেম্বর সম্পন্ন হয়। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ১৫০ জন ইউক্রেনীয় বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ১৮৯ জন ইউক্রেনীয় বন্দি মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন। এই দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের সংখ্যা নিয়ে কিছুটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে এর কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে একটি পোস্টে জানান, "রুশ বন্দিদশা থেকে আমাদের জনগণের প্রত্যাবর্তন আমাদের জন্য সবসময়ই অত্যন্ত সুখবর। আজ আমাদের দল ১৮৯ জন ইউক্রেনীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "এই বন্দি বিনিময়ে ২০২২ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলে বন্দি হওয়া দুই বেসামরিক নাগরিকও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।" এদিকে, জেলেনস্কি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানান, যারা এই আলোচনার জন্য সহায়তা করেছে।
রুশ মানবাধিকার কমিশনার তাতায়ানা মোসকালকোভা এক ভিডিও বার্তায় বন্দিদের মুক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করেন। তিনি জানান, মুক্তিপ্রাপ্ত সৈন্যদের শীতের পোশাক এবং ক্লান্ত-চেহারা দেখা গেছে, তবে তাদের মানসিকভাবে এবং শারীরিকভাবে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, "আমি আপনাদের সেবা, ধৈর্য এবং সাহসের জন্য ধন্যবাদ জানাই। খুব শিগগিরই আমাদের ছেলেরা তাদের আত্মীয় এবং বন্ধুদের আলিঙ্গন করবে এবং নিজেদের জন্মভূমিতে নববর্ষ উদযাপন করবে।"
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের মস্কো থেকে বেলারুশে পাঠানো হয়েছে, যেখানে তাদের মানসিক ও শারীরিক চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়।
এদিকে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক সামরিক হামলা চালানোর পর, পূর্ব ইউরোপের এই দেশে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া—এই চারটি প্রদেশের আংশিক দখল করে রেখেছে, যা ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক-পঞ্চমাংশ।
নতুন বছর শুরুর আগের দিন এই বন্দি বিনিময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বিরল শান্তির মুহূর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে, এবং এটি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কিছুটা অবসান ঘটানোর প্রতীক হতে পারে।