Logo

আন্তর্জাতিক    >>   “স্বাধীনতার ৫০ বছরে সিলেট: নিউইয়র্কে ‘বিরক্ত সিলেটবাসী’’র হামেশা — অবহেলা, বৈষম্য ও উন্নয়ন বঞ্চনার অবসান দাবিতে বিক্ষোভ”

“স্বাধীনতার ৫০ বছরে সিলেট: নিউইয়র্কে ‘বিরক্ত সিলেটবাসী’’র হামেশা — অবহেলা, বৈষম্য ও উন্নয়ন বঞ্চনার অবসান দাবিতে বিক্ষোভ”

“স্বাধীনতার ৫০ বছরে সিলেট: নিউইয়র্কে ‘বিরক্ত সিলেটবাসী’’র হামেশা — অবহেলা, বৈষম্য ও উন্নয়ন বঞ্চনার অবসান দাবিতে বিক্ষোভ”

প্রজ্ঞা নিউজ ডেস্ক : 
ডাইভারসিটি প্লাজায় গত ১৫ অক্টোবর ডিসেম্বর সিলেটবাসী নিউইয়র্কের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ‘বিরক্ত বৃহত্তর সিলেটবাসী, নিউইয়র্ক’ নামে এক সংগঠন সিলেট—সুনামগঞ্জ—মৌলভীবাজার—হবিগঞ্জ অঞ্চলের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উন্নয়ন দাবিসমূহ পুনরায় তুলে ধরেছে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও সিলেট অঞ্চলে অভাব, বৈষম্য ও উন্নয়ন বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে প্রবাসীদের ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রবাসী সিলেটবাসী বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখলেও তাদের জন্মভূমি আজও অবহেলিত। আলোচিত প্রধান দাবি ও অনুরোধগুলোর মধ্যে ছিল—ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নীত করা, ঢাকা–সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ, রেলপথ সংস্কার ও নতুন আন্তঃনগর ট্রেন চালু, সিলেট—কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন লাইন চালু, এবং সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (SDA) কার্যকরভাবে চালু করা।


বক্তৃতায় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়—প্রবাসীদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর ও সরকারি অফিসে হয়রানি বন্ধ করা, স্থাবর সম্পত্তি রক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়া, প্রতিটি জেলায় প্রবাসী মনিটরিং সেল ও ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ গঠন, দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এছাড়া চিকিৎসা মান বৃদ্ধি, জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ের যোগাযোগ রাস্তা উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সরবরাহ সুসংহতকরণ ও স্থানীয় উৎপাদিত বিদ্যুৎ স্থানীয় চাহিদা পূরণে অগ্রাধিকার প্রদানের দাবিও উঠে আসে।
সমাবেশে বলা হয়, অনেক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন সত্ত্বেও অর্থ ছাড় দেয়া হচ্ছে না এবং কাজ আটকে রয়েছে—এই অবস্থা দ্রুত সমাধান করতে হবে। বক্তারা সতর্ক করে বলেন, যদি কার্যকর ও টেকসই পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে দলমত নির্বিশেষে কড়াকড়ি আন্দোলন করার পথ খোলা থাকবে।
উপস্থিত ছিলেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ইউএসএ ইনকের সাধারণ সম্পাদক রোকন হাকিম (উপস্থাপনা), বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম , জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ইউএসএ ইনকের সহ-সভাপতি জাবেদ উদ্দিন, সাবেক সহ-সভাপতি জোসেফ চৌধুরী, লোকু আহমেদ, শামীম আহমেদ, সালেহ চৌধুরী, ফক্কু চৌধুরী, মোঃ উদ্দিন রানা, কিনো চৌধুরী,নিউইয়র্কের টাইম টিভির সিইও আবু তাহের , নিউইয়র্কের প্রথম আলোর সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধূরী , New York state Assembly এর জেলা ৩৬-এর প্রার্থী মেরী জোবাইদা , রানা ফেরদৌস চৌধুরী, কে কে আহমেদ সহ অনেকে। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাকিল আবু নোমান (জ্যাকসন হাইটসের জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টের সিইও) ও অন্যান্য সমাজ-ব্যক্তিত্বও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা আরও উল্লেখ করেন—সিলেটের শক্তিশালী প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পদ (সাদা পাথর, পর্যটন, খনিজ সম্পদ, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স) জাতীয় উন্নয়নে ব্যবহার হলেও স্থানীয় উন্নয়নে প্রবল অনুপাতে বঞ্চিত হচ্ছে এই অঞ্চল।
সমাবেশ থেকে ঘোষিত পূর্ণ দাবিসমূহ (সংক্ষেপে) ,ওসমানী বিমানবন্দর সচলভাবে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় উন্নীত করা, ঢাকা–সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নয়ন,রেলপথ সংস্কার ও নতুন আন্তঃনগর ট্রেন চালু, সিলেট—কক্সবাজার ট্রেন লাইন উদ্বোধন, সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (SDA) কার্যকর করা ও উন্নয়ন তহবিলের অবিলম্বে অর্থ ছাড় নিশ্চিত করা । প্রবাসী হয়রানি বন্ধ, সম্পত্তি সুরক্ষা, মনিটরিং সেল ও ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা মান উন্নয়ন, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে নদী ও খাল রক্ষা, পর্যটন সংরক্ষণ ও স্থানীয় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সংস্কার—ইত্যাদি।
বক্তারা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন—এই দাবি কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ নয়; এটি সিলেট অঞ্চলের মানুষজনের ন্যায্য অধিকার ও উন্নয়নের দাবি। প্রবাসীরা মনে করেন, তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে; কিন্তু নিজেরাই জন্মভূমিতে উন্নয়নের সুষ্ঠু অংশ না পেলে আস্থাহীনতা ও ক্ষোভ বেড়ে যাবে।
সমাবেশ শেষে একটি সমন্বিত অনলাইন ও কাগজপত্রে চিঠি পেশ করে দ্রুততর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয় এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও প্রদান করা হয়।