পার্লামেন্ট ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট
- By Jamini Roy --
- 28 December, 2024
জার্মানির রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকার ব্যবস্থার অচলাবস্থা দূর করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমাইয়ার। সংসদ ভেঙে দিয়ে তিনি আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে জার্মানিতে নতুন সরকারের জন্য পথ সুগম হলো।
চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের নেতৃত্বাধীন তিন দলের জোট সরকার—সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি), গ্রিন পার্টি এবং ফ্রি ডেমোক্রেটিক পার্টি (এফডিপি)—সাম্প্রতিক সময়ে ভেঙে যায়। জোট সরকারের পতনের পর সংসদে আস্থাভোটে শোলজ পরাজিত হন, যা দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়িয়ে তোলে।
অর্থনীতি, বাজেট, অভিবাসন, এবং নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্কের কারণে জোটের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। সম্প্রতি একটি ক্রিসমাস বাজারে হামলার পর নিরাপত্তা ইস্যুও উত্তপ্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে।
সংসদ ভেঙে দেয়ার পর প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমাইয়ার বলেন, "গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় জনগণের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।" তিনি আরও বলেন, বর্তমান জোট সরকারের ওপর জনগণের আস্থা কমে গেছে, তাই নতুন সরকার গঠন জরুরি।
প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "ঘৃণা ও সহিংসতার কোনো স্থান এই নির্বাচনী প্রচারণায় থাকবে না।" এছাড়া, তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, বিশেষ করে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন এক্স (পূর্বে টুইটার) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ভবিষ্যত সরকারকে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ, অভিবাসন ইস্যু এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করতে হবে।
আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বস্তি এনেছে। দলগুলো তাদের প্রচারণার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত শোলজ তত্ত্বাবধায়ক চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এই নির্বাচন ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ভোট দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।