তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব: গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান
- By Jamini Roy --
- 15 November, 2024
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তারেক রহমান, বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে এক সেমিনারে বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের বিষয়ে তার দলের ৩১ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। সেমিনারে, তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে পরিবর্তন আনার কথা বলেন, যাতে কোনো ব্যক্তি, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও, পরপর দুইবারের বেশি ক্ষমতায় না থাকতে পারেন। তারেক রহমান দাবি করেন যে, এ পদক্ষেপটি দেশে স্বৈরাচারী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধ করবে এবং একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে।
তারেক রহমান বলেন, "সংস্কারের উদ্দেশ্য কেবল সংবিধানের কয়েকটি বাক্য পরিবর্তন নয়, বরং মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানো।" তিনি আরো বলেন, যে সংস্কার জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, নারীর সম্মান ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করবে, সেই সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি এমন একটি রাষ্ট্র কাঠামো গড়তে চায় যেখানে আইন, বিচার এবং নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার সুষম বণ্টন থাকবে। তারেক রহমানের মতে, একদিকে যেমন দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা হবে, অন্যদিকে গণতান্ত্রিক পরিবেশে সকল নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে আরো জানান, "স্বেচ্ছাচারিতা, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দিয়ে ভয় সৃষ্টি করার সংস্কৃতি নির্মূল করতে হবে।" তিনি বিশ্বাস করেন যে, একটি সুশাসিত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উন্নত ও সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে।
এছাড়া, তারেক রহমান শোষণমুক্ত, দুঃশাসনহীন এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী একটি বাংলাদেশের আহ্বান জানান। তিনি বলেছিলেন, "বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং দেশের উন্নয়ন করতে যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব।"
তারেক রহমান বলেন, তার দলের ৩১ দফা প্রস্তাবে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশেষভাবে নারীদের অধিকারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং তাদের জন্য স্বাধীনতা, সম্মান ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তিনি শেষের দিকে আরও বলেন, বিএনপি এমন একটি রাষ্ট্র কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে জনগণের অধিকার রক্ষিত হবে, মিডিয়া স্বাধীন থাকবে এবং সরকার কোনোভাবেই জনগণের মতামত ও বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে না। তারেক রহমানের মতে, এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ এক সমৃদ্ধ, সুশৃঙ্খল এবং সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
এদিকে, সেমিনারে উপস্থিত অন্যান্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা, এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা। তারা সবাই তারেক রহমানের এই সংস্কার প্রস্তাবকে সমর্থন জানান এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্য এই পরিবর্তনগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরেন।