গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে: কাতার
- By Jamini Roy --
- 15 January, 2025
গাজায় চলমান সংঘাতের অবসানে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি বিনিময় চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে কাতার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেছেন, "আমরা আশাবাদী যে খুব শিগগির একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে চূড়ান্ত ঘোষণা আসার আগে অত্যন্ত সতর্ক থাকা উচিত।"
গাজায় সংঘাতের সমাপ্তি এবং মানবিক বিপর্যয় এড়াতে একযোগে কাজ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতার। বিশেষত হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর এই প্রচেষ্টা আরও তীব্র হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং চুক্তি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, "চুক্তি চূড়ান্ত করার দায়িত্ব এখন হামাসের হাতে।" এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি উভয় পক্ষকে নমনীয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন।
আলোচনার সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে পারে। এর বদলে ইসরায়েল প্রায় ১,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকর করার সময় গাজায় একটি বাফার জোন রক্ষার পরিকল্পনা রয়েছে।
হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা একটি "স্পষ্ট ও বিস্তৃত চুক্তি"র প্রত্যাশা করছে। এই অগ্রগতির বিষয়ে অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোকে ইতিমধ্যে অবহিত করা হয়েছে।
ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, হামাসের আক্রমণে ১,২১০ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৬,৬৪৫ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গাজার খান ইউনিস শহরের বাসিন্দা উম ইব্রাহিম আবু সুলতান বলেন, "আমি এই যুদ্ধে সবকিছু হারিয়েছি। শান্তি আসলে আমি দিনের পর দিন কাঁদব।"
যদিও নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য এই চুক্তির পক্ষে রয়েছেন, তবে উগ্র-ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গেভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এর বিরোধিতা করেছেন। স্মোত্রিচ এই চুক্তিকে "ধ্বংসাত্মক" বলে অভিহিত করেছেন।
গাজা এবং ইসরায়েলে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি একটি নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে। যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের শান্তি কামনা এবং আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার সমন্বয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যুদ্ধ, মানবিক সংকট এবং রাজনৈতিক জটিলতার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন হলে তা শুধু এই অঞ্চল নয়, বরং বৈশ্বিক শান্তির জন্যও একটি ইতিবাচক বার্তা দেবে।