নতুন প্রশাসনে ইলন মাস্ক ও বিবেক রামাস্বামীকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিলেন ট্রাম্প
- By Jamini Roy --
- 13 November, 2024
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর প্রশাসন গঠনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। এরই মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে, ধনকুবের ইলন মাস্ক এবং প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বিবেক রামাস্বামীকে সরকারী দক্ষতা বিভাগের (Department of Government Efficiency) দায়িত্ব দিয়েছেন।
১৩ নভেম্বর, মঙ্গলবার, ট্রাম্প এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেন, এবং জানান যে এই দুই সফল আমেরিকান সরকারি আমলাতন্ত্রের দুর্বলতা কাটিয়ে রাষ্ট্রীয় দপ্তরগুলো পুনর্গঠন করতে সাহায্য করবেন। ট্রাম্প আরও বলেন, "এই দুই জন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন, বিশেষ করে আমলাতন্ত্রে অতিরিক্ত বিধি-নিষেধ এবং অর্থের অপচয় রোধে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনে।"
ইলন মাস্ক, যিনি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিক, নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারে ব্যাপকভাবে সক্রিয় ছিলেন এবং প্রায় ২০ কোটি ডলার অনুদানও দিয়েছেন। মাস্কের নাম ট্রাম্পের বিজয়ী ভাষণে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "এটি একটি নতুন যুগের সূচনা, যেখানে ইলন মাস্কের মতো একজন উদ্ভাবক আমাদের দেশকে আরও উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে।"
অন্যদিকে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী, যিনি প্রযুক্তি খাতে সফল উদ্যোক্তা, অধিকারকর্মী এবং বিনিয়োগকারী, এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। তবে প্রাথমিক বাছাইয়ে পরাজিত হয়ে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ান। রামাস্বামী এবার ট্রাম্পের প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ দিচ্ছেন।
নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সির কাজ কি হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে, ট্রাম্পের মতে, এই দপ্তরটি সরকারের বাইরে থেকে কাজ করবে এবং এর লক্ষ্য হবে, সরকারি কার্যক্রমে উদ্যোক্তার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসা। এটি ট্রাম্পের "Save America" উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে, যা সরকারের খরচ কমানো এবং আমলাতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধির উপর মনোযোগ দেবে। ট্রাম্প এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, "এটি আমাদের সময়ের Manhattan Project হতে চলেছে।"
এই নতুন দপ্তরের জন্য ট্রাম্প ২০২৬ সালের ৪ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস। উক্ত দিনটিতে এই প্রকল্পের সফল সমাপ্তির লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
এদিকে, মাস্ক এবং রামাস্বামী দুজনেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা এই পদে দায়িত্ব পালনে কোন ছাড় দেবেন না এবং সরকারি অপচয় এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। মাস্ক এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, "এটি এক বড় ধরনের শকওয়েভ হবে, যাদের সরকারের অপচয়ে সংশ্লিষ্ট রয়েছে, তাদের জন্য এটি কাল হয়ে দাঁড়াবে।" রামাস্বামীও তাঁর এক পোস্টে বলেন, "আমরা কোনো ভদ্রতা দেখাতে যাব না, কাজ শুরু করব কঠোরভাবে।"
এটি ট্রাম্পের প্রশাসন গঠনের প্রথম পদক্ষেপ হলেও, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া এখনও চলমান। ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে পিট হেগসেথ এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির জন্য ক্রিস্টি নোয়েমের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রীর জন্য মার্কো রুবিওর নামও শোনা যাচ্ছে।
এই সব নিয়োগ এবং পদক্ষেপগুলো নতুন প্রশাসনের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্যের প্রতিফলন হতে পারে, যেখানে সরকারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং জনস্বার্থে দক্ষতা উন্নয়ন করা হবে।