বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন যে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু সাফল্য অর্জন করেছে, কিন্তু মিডিয়া তা ঠিকভাবে চিহ্নিত করছে না। তিনি ৯ নভেম্বর, শনিবার হাইকোর্ট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ইয়ুথ ফোরামের একটি আলোচনা সভায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। বিএনপি নেতা বলেন, “সরকার তিন মাসে অনেক কাজ করেছে, তবে মিডিয়া তাদের কোনো সাফল্য দেখতে পাচ্ছে না। আমি তরুণদের অনুরোধ করব, ধৈর্য ধরুন এবং সময় দিন।”
ফখরুল আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ যে জঞ্জাল তৈরি করে গেছে, তা সরিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ব। নির্বাচিত পার্লামেন্টের মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমি একজন গণতন্ত্রকামী মানুষ, এবং দেশের উন্নতি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আমরা কাজ করছি।"
তিন মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, "এখনও সরকারের অনেক সাফল্য মিডিয়ার নজরে আসছে না, কিন্তু এ মুহূর্তে সবাইকে সময় দিতে হবে।" তিনি আরও বলেন, "এই সরকার যদি পরিপূর্ণভাবে কাজ করতে পারে তবে এটি দেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় সুযোগ হয়ে দাঁড়াবে।"
ফখরুল বলেন, "এই সুযোগ হারালে জাতি হিসেবে আমরা বিপন্ন হয়ে যাব। ফ্যাসিবাদীরা আবার মাথাচাড়া দেয়ার চেষ্টা করছে, আর কিছু মিডিয়া তার পক্ষে কাজ করছে।" তিনি দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তরুণদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন এবং বলেন, "আমি আশা করি, ইয়ুথ ফোরাম দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা, তা বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।"
তিনি আরও বলেন, “যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ততটাই প্রয়োজনীয় হবে তরুণদের ভূমিকা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়। আমাদের প্রজন্মকে একযোগভাবে কাজ করতে হবে, যাতে আমরা শক্তিশালী, কার্যকরী এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।”
নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, "যতক্ষণ না জনগণের সঠিক অংশগ্রহণ না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সংস্কার অর্থবহ হবে না। এটি সংসদীয় ব্যবস্থায় হওয়া উচিত এবং সে জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।"
ফখরুল ইসলাম আলমগীর তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, "এবার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তা যদি হারিয়ে যায়, তবে গণতন্ত্রের স্বপ্ন আরও দুরূহ হবে। তরুণদের উৎসাহ, শক্তি ও সমর্থন এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।"
তিনি আরও জানান, বিএনপি ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতি, উন্নয়ন এবং সমাজের নানা ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজ করবে, যাতে দেশের প্রকৃত উন্নতি সম্ভব হয়। "তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, মাদক থেকে দূরে রাখা, এবং দেশে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা আমাদের প্রধান লক্ষ্য," বলেন তিনি।
ফখরুল শেষ পর্যন্ত বলেন, "দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হলে সবার একতাবদ্ধ প্রচেষ্টা দরকার, এবং ইয়ুথ ফোরামের তরুণরা সেই প্রচেষ্টার মূল চালিকাশক্তি হতে পারে।"