যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএইড কার্যক্রম বাংলাদেশে স্থগিত
- By Jamini Roy --
- 26 January, 2025
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে এবং নতুন কোনো সহায়তা অনুমোদন আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে ইউএসএইড পরিচালিত সমস্ত কার্যক্রমও স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নির্বাহী আদেশের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ইউএসএইডের অধিগ্রহণ ও সহায়তা তত্ত্বাবধায়ক চুক্তি কর্মকর্তা ব্রায়ান অ্যারনের সই করা এক চিঠিতে এই নির্দেশনা জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউএসএইডের অধীনে বাংলাদেশে চলমান সব চুক্তি, কার্য আদেশ, অনুদান এবং সমবায় চুক্তি অবিলম্বে বন্ধ অথবা স্থগিত রাখতে হবে। সেই সঙ্গে বরাদ্দকৃত অর্থ খরচে সংযম প্রদর্শনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, লিখিত কোনো নতুন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এই চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের বিষয়টি রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত একটি গাইডলাইন পাঠানো হবে বলেও জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এর প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে স্থগিত করা প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হবে, এগুলো বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না।
ফাঁস হওয়া মার্কিন অভ্যন্তরীণ নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থা, মৌলিক শিক্ষা, পরিবেশগত কার্যক্রম এবং স্বাস্থ্য কর্মসূচির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে জরুরি খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম এর আওতায় না পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে ইউএসএইড কার্যক্রম এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প হিসেবে পরিচিত। এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা, গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন, মৌলিক শিক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা।
এই স্থগিতাদেশ বাংলাদেশের ইউএসএইড পরিচালিত প্রকল্পগুলোতে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তবে জরুরি খাদ্য সহায়তার মতো প্রকল্পগুলো প্রভাবিত না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রবিবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে 'সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস' নামের একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশটি সব দেশের বৈদেশিক সহায়তার রিভিউ করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে কিছু গণমাধ্যম বিভ্রান্তিকর শিরোনাম ব্যবহার করে শুধু বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরছে, যা পাঠকদের বিভ্রান্ত করতে পারে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছ থেকে আরও স্পষ্টতা ও দায়িত্বশীলতার প্রত্যাশা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন মার্কিন প্রশাসন।