Logo

আন্তর্জাতিক    >>   কিয়েভে ছয় বিদেশি দূতাবাসে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়

কিয়েভে ছয় বিদেশি দূতাবাসে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়

কিয়েভে ছয় বিদেশি দূতাবাসে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়

রাশিয়ার দফায় দফায় চালানো ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় সময় সাতটার দিকে এই হামলা শুরু হয়। ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, হামলায় কিয়েভে অবস্থিত ছয়টি বিদেশি দূতাবাস ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আলবেনিয়া, আর্জেন্টিনা, উত্তর মেসিডোনিয়া, ফিলিস্তিন, পর্তুগাল এবং মন্টিনিগ্রোর দূতাবাস ভবনগুলো হামলার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত একজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সেরহি পপকো জানিয়েছেন, রুশ বাহিনী আটটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে হাইপারসনিক কিনঝাল এবং ইস্কান্দার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। হামলার পরপরই কিয়েভের আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায় এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরে যায়। একটি অফিস ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো জানিয়েছেন, হামলায় আহত দুই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শহরের চারটি এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়ে বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং ভবনে আগুন লেগে যায়। জরুরি সেবা প্রদানকারী দলগুলো দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

হামলার আগে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করেছিল। তারা জানিয়েছিল, উত্তর দিক থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে আসছে। তবে, এই সতর্কতার পরও ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়নি।

কিয়েভ ছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসন এবং আরও কয়েকটি শহরে রুশ বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। খেরসনে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, তারা ইউক্রেনের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে দূরপাল্লার নির্ভুল অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে। রোস্তভ অঞ্চলে ইউক্রেনের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে রাশিয়া জানিয়েছে।

ইউক্রেনের কূটনৈতিক মিশন ও বেসামরিক অঞ্চলে হামলার ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়ার ওপর চাপ আরও বাড়তে পারে। যুদ্ধবিধ্বস্ত কিয়েভে এই ধরনের হামলা কেবল জনজীবন বিপর্যস্ত করছে না, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে।

কিয়েভের বিভিন্ন এলাকায় জরুরি সেবা প্রদানকারী দলগুলো উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ চলছে। পাশাপাশি, ইউক্রেন সরকার হামলার বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ ক্রমশ আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। কিয়েভে চালানো এই হামলা যুদ্ধের নতুন এক মাত্রা উন্মোচন করেছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিদেশি দূতাবাস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন। ইউক্রেনের পরিস্থিতি ঘিরে আরও উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।