মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের আকস্মিক ইরাক সফর
- By Jamini Roy --
- 14 December, 2024
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন আকস্মিক সফরে ইরাক গেছেন, যেখানে তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। এই সফরটি সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তন পরবর্তী পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইরাক সফরে ব্লিংকেন আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন। সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর ভূমিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সাথে সমন্বিত সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা এই সফরের মূল লক্ষ্য।
ইরাক সফরের আগে ব্লিংকেন তুরস্ক সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। তুরস্ক সিরিয়ার স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে, এবং এই বৈঠক সিরিয়ার সংকট মোকাবিলায় আঞ্চলিক সমর্থন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার অংশ ছিল।
ইরাকে অবস্থানকালে ব্লিংকেন আল-আনবার প্রদেশে একটি নিরাপত্তা ফোরামে যোগ দেন। সেখানে জনপ্রিয় মবিলাইজেশন ফোর্সেস (পিএমএফ)-এর প্রধান ফালেহ আল-ফাইয়াধ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “এক দশকের চ্যালেঞ্জের পর আমরা আশাবাদী যে সিরিয়ার স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।”
ফালেহ আল-ফাইয়াধ ইরাকের নীতি পরিষ্কার করে বলেন, “ইরাক কখনোই সিরিয়া বা অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনি। এটি আমাদের নীতির অংশ নয়।” তিনি ইসরায়েল ও গোলান মালভূমি দখলের বিষয়েও কথা বলেন। ইসরায়েলের গোলান মালভূমি দখলকে তিনি গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সিরিয়ার সংকটকে আরো জটিল করার একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্লিংকেনের এই সফর আঞ্চলিক সংকট মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত করার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের কৌশল হিসেবে এটি দেখা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো, সিরিয়ার পুনর্গঠন এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য আঞ্চলিক সমর্থন নিশ্চিত করা। ইরাক ও তুরস্ক সফরের মাধ্যমে ব্লিংকেন এই অঞ্চলে তার দেশের অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। গোলান মালভূমি দখলসহ অন্যান্য ইস্যুতে ইসরায়েলের ভূমিকা, প্রতিবেশী দেশগুলোর ভূরাজনৈতিক কৌশল, এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতি—সবমিলিয়ে এই অঞ্চলে একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
ব্লিংকেনের এই সফর এবং আল-ফাইয়াধের বক্তব্য উভয়ই সিরিয়া ও এর প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যতের বার্তা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এই সংকট সমাধানে একটি নিরপেক্ষ এবং সুসংগঠিত নীতিতে কাজ করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।