বিদ্রোহীদের দখলে দামেস্ক, পালালেন বাশার আল-আসাদ
- By Jamini Roy --
- 08 December, 2024
সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) দাবি করেছে, দেশটি এখন সম্পূর্ণ মুক্ত। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করে কুখ্যাত সেদনায়া কারাগারের দরজা খুলে দেয়। সেখান থেকে বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার পর বিদ্রোহীরা দেশটিতে "অন্ধকার যুগের সমাপ্তি এবং নতুন যুগের সূচনা" ঘোষণা করে।
এইচটিএস তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানায়, "আমরা দামেস্ককে স্বৈরাচারী শাসক বাশার আল-আসাদের হাত থেকে মুক্ত করেছি। এটি একটি নতুন সিরিয়ার সূচনা, যেখানে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।"
বিদ্রোহীদের অগ্রগতি দেখে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাজধানী ছেড়ে পালিয়েছেন। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার সকালে একটি ব্যক্তিগত বিমান দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। ধারণা করা হচ্ছে, আসাদ ওই বিমানে ছিলেন।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর)-এর তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি ছাড়ার সময় সরকারি সেনারা বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিল। কিন্তু আসাদ কোথায় গেছেন, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
হোমস শহর দখলের পর বিদ্রোহীরা কোনো বাধা ছাড়াই রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করে। শহরের প্রধান চত্বরে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে "সিরিয়া মুক্ত" এবং "আসাদ পালিয়েছে" বলে স্লোগান দেন। বিদ্রোহীরা সেদনায়া কারাগারের দরজা খুলে হাজারো বন্দিকে মুক্তি দেয়। জনতা তাদের সঙ্গে উদযাপন করে।
বিদ্রোহী নেতারা সাধারণ মানুষের প্রতি সদয় আচরণের আহ্বান জানান। বিদ্রোহী নেতা মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেন, "আপনারা যেসব শহর ও গ্রামে প্রবেশ করবেন, সেখানকার মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন।"
এইচটিএস জানিয়েছে, বাশার আল-আসাদের পরিবারের অর্ধশতাব্দীর শাসনে যারা বাস্তুচ্যুত বা কারাবন্দী ছিলেন, তারা এখন ঘরে ফিরতে পারবেন। বিদ্রোহীরা বলেছে, "এটি একটি নতুন সিরিয়া হবে, যেখানে সবাই শান্তিতে বসবাস করবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।"
ইরাক সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো থেকে প্রায় দুই হাজার সিরিয়ান সেনা পালিয়ে ইরাকে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে। দামেস্কের আশপাশের সামরিক অবস্থান থেকে আসাদের সেনারা সরে গেছে। বিরোধী বাহিনী পশ্চিম দামেস্ক এবং পূর্ব ঘোউতায় অগ্রসর হয়েছে।
দামেস্ক দখলের মাধ্যমে বিদ্রোহীরা বড় ধরনের বিজয় অর্জন করেছে। তবে এই বিজয় দেশটিকে কতটা স্থায়ী শান্তি এবং স্থিতিশীলতা এনে দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিদ্রোহীদের দাবি, তারা একটি সমানতালে শাসিত নতুন সিরিয়া গড়তে চায়। তবে দীর্ঘ সংঘাতের পর দেশ পুনর্গঠনে তাদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
সিরিয়ার জনগণের জন্য এটি একটি নতুন সূচনা হতে পারে, তবে ভবিষ্যতের পথ কতটা মসৃণ হবে, তা সময়ই বলে দেবে।