জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান নিয়ে আইনি বিতর্ক
- By Jamini Roy --
- 02 December, 2024
"জয় বাংলা"—বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় স্লোগান। ২০২০ সালে হাইকোর্ট এটিকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা দিলেও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন আইনি বিতর্ক চলছে। রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করেছে। আগামী রোববার (৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
"জয় বাংলা" বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতীয়তাবাদের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই স্লোগানটি কেবল স্বাধীনতার জন্য নয়, জাতিগত ঐক্যের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। তবে স্বাধীনতার পরে দীর্ঘ সময় এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অবহেলিত ছিল।
২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদ "জয় বাংলাকে" জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা চেয়ে একটি রিট আবেদন করেন। রিটের শুনানিতে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২০ সালের ১০ মার্চ "জয় বাংলা"কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করে রাষ্ট্রপক্ষ সম্প্রতি আপিল বিভাগে আবেদন করেছে। তাদের যুক্তি, এমন রায় বাস্তবায়নের জন্য সাংবিধানিক পরিপ্রেক্ষিতে আরও বিশ্লেষণ প্রয়োজন। রাষ্ট্রপক্ষ মনে করে, এই সিদ্ধান্ত সংবিধান ও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে হওয়া উচিত।
রাষ্ট্রপক্ষের এই আপিলের শুনানি আগামী রবিবার (৮ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগে অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক। আপিল বিভাগ কীভাবে এই আবেদন গ্রহণ করে, তার ওপর নির্ভর করবে জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতির ভবিষ্যৎ।
জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে জনমত ব্যাপকভাবে ইতিবাচক। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধারা এবং প্রগতিশীল রাজনীতিবিদরা এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে কিছু মহল থেকে এর প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
জয় বাংলা বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। এ নিয়ে চলমান আইনি বিতর্ক শুধু একটি স্লোগানের স্বীকৃতি নয়; এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত জাতির জন্য এই ঐতিহ্যের গুরুত্ব আরও স্পষ্ট করবে।