বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানো ঠিক হয়নি: রিজভী
- By Jamini Roy --
- 12 November, 2024
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বঙ্গভবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানোর ঘটনাকে 'অপরাধ' হিসেবে অভিহিত করেছেন। রিজভী বলেন, ‘‘এটি ঠিক হয়নি।’’ তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘বঙ্গভবন থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানোর ঘটনা ইতিহাসের ভুল সিদ্ধান্ত।’’ ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টের পর খন্দকার মোশতাক বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি আবার শেখ মুজিবের ছবি পুনঃস্থাপন করেছিলেন। তিনি খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমানের সময়ের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘খন্দকার মোশতাকও বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়েছিলেন, কিন্তু পরে জিয়াউর রহমান সেই ছবি পুনরায় টাঙিয়েছিলেন।’’
রিজভী আরও বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, জাতীয় পর্যায়ে যাদের অবদান রয়েছে, তাদের সম্মান দেওয়া উচিত। ইতিহাস এবং জনগণ তার বিচার করবে।’’ তিনি ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘এই সরকারের অধিকাংশ সদস্যেরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কোনো ভূমিকা রাখেননি।’’ তিনি বর্তমান সরকারের শাসনামলে অনেক চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং নেতাকর্মীকে রাজনৈতিক কারণে নির্যাতিত হওয়ার কথা তুলে ধরেন। বিশেষত, ড্যাবের (ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সদস্যদের প্রতি অসম্মান এবং তাদের আন্দোলনকে দমন করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এরা শেখ হাসিনার দোসর।’’
শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক তুলে রিজভী বলেন, ‘‘তিনি স্বাধীনতার পর বাকশাল কায়েম করেছিলেন, তবে স্বাধীনতার যুদ্ধে তার কোনো ভূমিকা ছিল না।’’ রিজভী বলেন, ‘‘স্বাধীনতার যুদ্ধের ঘোষণাটি দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।’’ তিনি বলেন, ‘‘আজকে যারা স্বাস্থ্য সচিব এবং উপদেষ্টা হয়েছেন, তারা গণতন্ত্রের জন্য কোনো আন্দোলন করেননি, বরং প্রতিরোধ করেছেন।’’
রিজভী আরও বলেন, ‘‘আমরা স্বীকার করি, শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম বাংলাদেশের জনগণের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তবে তার শাসনামলের অনেক সিদ্ধান্ত ছিল বিভাজনমূলক এবং গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।’’ তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, ‘‘৭৫-এর ১৫ আগস্টের পরে খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে দিয়েছিলেন, এবং পরে জিয়াউর রহমান সেটি পুনরায় টাঙিয়েছিলেন।’’
এদিকে, শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানোর পেছনে অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য নিয়োগ পাওয়া উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্য আসার পর বিষয়টি আরো বিতর্কিত হয়ে ওঠে। মাহফুজ আলম তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে লেখেন, ‘‘এটি আমাদের জন্য লজ্জার যে, ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো হয়নি।’’ তিনি বলেন, ‘‘শেখ মুজিব এবং তার কন্যা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে জনগণের প্রতি যে অন্যায় করেছেন, তার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।’’
এ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘‘আমরা কোনও সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কাজ করি না। ইতিহাসের বিচার জনগণের হাতে রয়েছে।’’