রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদে থাকা না-থাকা নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিতর্ক ও সংকট গভীর হচ্ছে। তিনি পদত্যাগ করবেন নাকি অপসারণ হবেন—এ প্রশ্নে এখনো সরকার কোনো সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিএনপি, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল, এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না, কারণ তারা মনে করে, রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হলে দেশে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকটের ঝুঁকি বাড়বে।
বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে রাষ্ট্রপতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণ নিয়ে সরকার এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে আলোচনা চলছে যে, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি থাকবেন কি থাকবেন না, এটি এখন বাংলাদেশের কোনো আইনি বা সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়, বরং এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।’ তিনি আরও জানান, সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে এবং শান্ত থাকার জন্য জনগণকে আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। রাতের বেলায় ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বুধবারও বঙ্গভবনের আশপাশে কয়েকজন বিক্ষোভকারীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বঙ্গভবনের সামনে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং র্যাবের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং অগ্রগতি হলে সবাইকে জানানো হবে।
বিএনপি মনে করে, রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে দেশে নতুন করে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে, যা এ মুহূর্তে কাম্য নয়। বিএনপির শীর্ষ নেতারা গতকাল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। তারা রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন এবং নতুন কোনো জটিলতা এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে সরকার আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত না নিলেও বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা চলছে। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বঙ্গভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে, কারণ রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলমান রয়েছে।