লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম
- By Jamini Roy --
- 14 January, 2025
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রেসিডেন্ট নাওয়াফ সালাম লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন তার নেতৃত্বে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এই মনোনয়ন লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্র শিয়া দল আমালের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনের কার্যালয় থেকে ঘোষণা আসে যে, সংসদের ১২৮ জন আইনপ্রণেতার মধ্যে ৮৪ জন নাওয়াফ সালামের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট আউন তার সঙ্গে আলোচনা শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেন।
২০২২ সালের অক্টোবর থেকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট পদ খালি ছিল। একই সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হচ্ছিল। জোসেফ আউনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া এবং নাওয়াফ সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার মধ্য দিয়ে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার সমাপ্তি ঘটল।
গত ৯ জানুয়ারি পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের সমর্থনপুষ্ট সেনাপ্রধান জোসেফ আউন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এরপর শুরু হয় নতুন প্রধানমন্ত্রী মনোনয়নের আলোচনা।
নাওয়াফ সালাম একজন সংস্কারবাদী নেতা এবং সুন্নি মুসলিম। লেবাননের সাংবিধানিক কাঠামো অনুসারে, কেবল সুন্নি মুসলিমরাই প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। সালাম এর আগেও দুবার প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে এবার তার মনোনয়নকে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের প্রধান হিসেবে সালাম ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যা মামলাসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলায় নেতৃত্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার প্রধানমন্ত্রী হওয়া স্থানীয় গণমাধ্যমে একটি বড় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অনেকে এটিকে "সুনামি" বলে উল্লেখ করেছেন।
নাওয়াফ সালামের মনোনয়ন হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্রদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। ক্ষমতাসীন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির প্রতি হিজবুল্লাহর সমর্থন ছিল বলে ধারণা করা হয়। হিজবুল্লাহর সংসদীয় ব্লকের নেতা মোহাম্মদ রাদ বলেছেন, এই মনোনয়ন দেশের মধ্যে বিভাজনের বীজ বপন করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে নতুন মন্ত্রিসভা লেবাননের সাম্প্রদায়িক ক্ষমতা ভাগাভাগির ঐতিহ্যকে সম্মান করবে।
নাওয়াফ সালামের নেতৃত্বে লেবাননের নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশটির রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠার একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তার সংস্কারপন্থী অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা লেবাননের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে বলে অনেকেই আশা করছেন। তবে হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্রদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা নতুন সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।