ইরান প্রদর্শন করেছে ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগার
- By Jamini Roy --
- 11 January, 2025
ইরান চলমান ইসরাইল এবং পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তারা একটি ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগারের প্রদর্শনী করেছে এবং দাবি করেছে যে, তারা নতুন বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)-এর বরাতে তাসনিম নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, এই সংরক্ষণাগারটি ইরানের সামরিক শক্তি ও প্রযুক্তির একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আইআরআইবিতে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, আইআরজিসির কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ ওই সংরক্ষণাগার পরিদর্শন করেছেন। হাজিজাদেহ ওই স্থানটিকে ‘সুপ্ত আগ্নেয়গিরি’ বলে বর্ণনা করেছেন, যা ইরানের সামরিক বাহিনীর শক্তির প্রদর্শনী হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
গত বছর অক্টোবর এবং এপ্রিল মাসে ইরান তার ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ব্যবহার করে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছিল। এ ঘাঁটিতে সংরক্ষিত ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ইরানকে তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ইরানকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আবাদানে এক অনুষ্ঠানে, আইআরজিসির কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি ঘোষণা করেন, তারা ‘নতুন বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্র’ তৈরি করছে। তাসনিম নিউজের বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, চলতি মাসে ইরান নতুন মহড়া ও যুদ্ধ মহড়ার আয়োজন করবে, যেখানে ‘ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সিটি’ উন্মোচিত হবে। এই মহড়ার মধ্যে ভূগর্ভে সংরক্ষিত ক্ষেপণাস্ত্র এবং দক্ষিণ ইরানে জাহাজে থাকা আরেকটি স্থাপনা প্রদর্শিত হবে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনী সম্প্রতি বেশ কয়েকটি যুদ্ধ মহড়া চালিয়েছে এবং শুক্রবার তেহরানে ১ লাখ ১০ হাজার সদস্যের একটি বৃহৎ মহড়া পরিচালনা করেছে বাসিজ (স্বেচ্ছাসেবক) বাহিনী। এই মহড়ার মাধ্যমে ইরান তার সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে তার অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।
সিএনএন বলছে, ইরান তার ক্ষমতা আঞ্চলিকভাবে ধরে রাখার জন্য লেবানন, গাজা এবং ইয়েমেনে সমর্থিত বাহিনীর মাধ্যমে কাজ করছে। ইরান চায় যে, এ অঞ্চলে তার শক্তি কমে না যায়, এমনকি সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ সরকারের পতন ঘটলেও ইরান তার প্রভাব ধরে রেখেছে।
সালামি বলেন, “অন্য কোনো দেশের পদক্ষেপের ভিত্তিতে আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা হয়নি।” তিনি আরও বলেন, ইসরাইলের হামলার জবাবে ইরান তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করেছে। ইসরাইল ২০২২ সালের অক্টোবরে ইরানকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছে ইরান। ইরান তার আত্মরক্ষার অধিকার রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে ঘোষণা করেছে।