২০২৪ সালের যত ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা
- By Jamini Roy --
- 30 December, 2024
২০২৪ সাল বিমান দুর্ঘটনার দিক থেকে এক বিপর্যয়কর বছর হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বড় ও ছোট বিমান সংস্থাগুলো একের পর এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এ বছর শুধু দুর্ঘটনার সংখ্যায় নয়, প্রাণহানি এবং আর্থিক ক্ষতির দিক থেকেও সব আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
বছরের শুরুতেই, ২ জানুয়ারি, জাপানের টোকিও বিমানবন্দরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। জাপান এয়ারলাইন্সের একটি এয়ারবাস এ৩৫০-৯০০ অবতরণের সময় কোস্টগার্ডের একটি বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খায়। বিমানের ৩৭৯ যাত্রী বেঁচে গেলেও কোস্টগার্ডের ৫ কর্মী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। তদন্তে দেখা গেছে, অবতরণের সময় যোগাযোগে ভুলের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
২২ মে, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরগামী পথে মাঝ আকাশে তীব্র বায়ুপ্রবাহের মুখে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাইলট ব্যাংককে জরুরি অবতরণ করেন। এই ঘটনায় একজন যাত্রী নিহত এবং অন্তত ৭১ জন আহত হন।
৯ আগস্ট ব্রাজিলের ভিনহেডো শহরে ভিওপাস এয়ারলাইন্সের এটিআর ৭২-৫০০ বিমান আকাশে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। বিমানের ৬২ জন আরোহীর সবাই প্রাণ হারান। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বিমানের কারিগরি ত্রুটির যথাযথ সমাধান না করার বিষয়টি উঠে আসে।
বছরের শেষ মাসে একাধিক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।
- ২২ ডিসেম্বর: ব্রাজিলের গ্রামাদো শহরে একটি ছোট বিমান বাড়ির চিমনিতে আঘাত করে দোকানের ওপর আছড়ে পড়ে। বিমানে থাকা একই পরিবারের ১০ জন প্রাণ হারান এবং ১৭ জন পথচারী আহত হন।
- ২৫ ডিসেম্বর: আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের এমব্রেয়ার ১৯০ বিমান কাজাখস্তানের আকতাউতে জরুরি অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। এতে ৩৮ জন নিহত হন। প্রথমে এটি পাখির সঙ্গে ইঞ্জিনের সংঘর্ষ বলে ধারণা করা হলেও পরবর্তীতে বাইরের হস্তক্ষেপের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ।
- ২৯ ডিসেম্বর: দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডের জেজু এয়ারলাইন্সের বিমান ল্যান্ডিং গিয়ার ত্রুটির কারণে চাকা ছাড়াই অবতরণ করতে গিয়ে রানওয়ের দেয়ালে ধাক্কা খায়। এতে আগুন ধরে যায় এবং বিমানে থাকা ১৮১ জনের মধ্যে ১৭৯ জনই নিহত হন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান মাত্র দুজন ক্রু।
২০২৪ সালে বিমান দুর্ঘটনার ঘটনা যেমন বাড়ছে, তেমনই নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতিও স্পষ্ট হয়েছে। এ বছর এমনকি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্সগুলোও একাধিক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাগুলোকে বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখছেন।
এ বছরের দুর্ঘটনাগুলো বিশ্বকে বিমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। ২০২৪ সালের এই ভয়াবহ অধ্যায় বিমান পরিবহন খাতকে আগামীর জন্য প্রস্তুত হতে নতুন দিশা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।