চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর
- By Jamini Roy --
- 02 January, 2025
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ইসকনের প্রাক্তন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলামের আদালত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) নামঞ্জুর করেছেন। চিন্ময়ের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার আসামি তালিকায় আরও ১৮ জনের নাম রয়েছে।
চিন্ময়ের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন আইনজীবী চিন্ময়ের পক্ষে শুনানিতে অংশ নিতে সকাল সোয়া ১০টার দিকে আদালতে উপস্থিত হন। তাদের সুরক্ষার জন্য পুলিশ, বিজিবি এবং সেনাসদস্যদের মোতায়েন করা হয়। আদালতের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে কঠোর তল্লাশি চালানো হয়। এমনকি সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরাও নিরাপত্তা কার্যক্রমে অংশ নেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আদালতের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে চিন্ময়ের মামলাকে কেন্দ্র করে কোনো অঘটন এড়ানোর জন্যই এমন ব্যবস্থা।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী গত বছরের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে একটি বড় সমাবেশ আয়োজন করেন। এরপর ২২ নভেম্বর রংপুরেও আরেকটি সমাবেশের নেতৃত্ব দেন। এসব কর্মকাণ্ডের কয়েক দিনের মধ্যেই ৩১ অক্টোবর চিন্ময়ের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। ২৫ নভেম্বর তাকে ঢাকায় গ্রেফতার করা হয় এবং পরদিন আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশের দিন চট্টগ্রামের আদালত চত্বরে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সুযোগে কিছু দুর্বৃত্ত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎক্ষণাৎ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও হামলার ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দেয়।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে মামলাটি এখনও চলমান। তার জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় সনাতনী সম্প্রদায়ের অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে আদালত চত্বরে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভবিষ্যতে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহের এই মামলাটি শুধু আইনগত দিকেই নয়, বরং সামাজিক এবং ধর্মীয় পর্যায়েও ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিন্ময়ের নেতৃত্বাধীন কর্মকাণ্ড এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো দেশের আইনশৃঙ্খলার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।