যুক্তরাষ্ট্রকে বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি বলে চীনের সমালোচনা
- By Jamini Roy --
- 23 December, 2024
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে "যুদ্ধ-আসক্ত" বলে সমালোচনা করেছে। দেশটির দাবি, বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটন সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ (পেন্টাগন) সম্প্রতি চীনের সামরিক বাজেট ও নীতির বিরুদ্ধে তথ্য প্রকাশ করায় চীন তাদের ওপর বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে রয়েছে তাইওয়ান। বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি তাইওয়ানকে ৫৭ কোটি ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে চীন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝ্যাং জিয়াওগাং জানান, চীনের সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
সম্প্রতি পেন্টাগন ১৮২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে চীনের সামরিক বাজেট, প্রতিরক্ষা নীতি এবং পররাষ্ট্রনীতির উপর নানা তথ্য প্রকাশ করা হয়। চীন এ প্রতিবেদনকে মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বলে অভিহিত করেছে। চীনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র এই প্রতিবেদন ব্যবহার করে নিজের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য অজুহাত তৈরি করছে।
ঝ্যাং জিয়াওগাং বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র একতরফা আধিপত্য বজায় রাখতে সামরিক শক্তি ব্যবহার করে। তারা বিভিন্ন দেশে সরকার পতনের বিপ্লব উসকে দিচ্ছে। ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক সম্পৃক্ততার কারণে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।"
চীন দাবি করেছে, তারা শান্তিপূর্ণ উন্নয়নে বিশ্বাস করে এবং আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক শক্তি ব্যবহার করে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মার্কিন পারমাণবিক নীতি নিয়েও কড়া প্রশ্ন তুলেছে। ঝ্যাং জিয়াওগাং বলেন, চীন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালা মেনে চলে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই নীতিমালা লঙ্ঘন করছে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অকাস সাবমেরিন চুক্তি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শান্তি বিঘ্নিত করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনার প্রভাব কেবল দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি বৈশ্বিক রাজনীতি ও নিরাপত্তার উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে। তাইওয়ান ইস্যু এবং পেন্টাগনের প্রতিবেদন নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা বিশ্বজুড়ে নতুন নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি করতে পারে।