ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ভয়াবহ রুশ হামলা
- By Jamini Roy --
- 14 December, 2024
ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা দেশটির যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ইউক্রেনজুড়ে ৯৩টি মিসাইল এবং ২০০ ড্রোন হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটিকে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার হামলা শুরুর পর বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ওপর সবচেয়ে বড় আক্রমণগুলোর একটি বলে উল্লেখ করেছেন।
রুশ হামলায় ইউক্রেনের অন্যতম বৃহৎ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম। কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরের সাধারণ মানুষকে পুনরায় মেট্রো স্টেশনে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে এই আক্রমণ। বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংযোগ ব্যাহত হওয়ায় শীতের মধ্যে সাধারণ মানুষ আরও দুর্দশায় পড়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর একটি বড় অংশ প্রতিহত করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। তবে স্থল অভিযানের মাধ্যমে রুশ বাহিনী নতুন করে চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষত পোকরোভস্ক অঞ্চলে রুশ বাহিনী একদিনে একাধিকবার প্রবেশের চেষ্টা করেছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী। এই অঞ্চলে লড়াই আরও তীব্র হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন কিয়েভের কর্মকর্তারা।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির আলোচনা চললেও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নতুন অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে আরও সামরিক সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইউক্রেনীয় হামলায় মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়েছে ক্রেমলিন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ট্রাম্পের মন্তব্য রাশিয়ার অবস্থানের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়। তিনি আরও বলেন, কিয়েভ যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নিতে এড়িয়ে যাচ্ছে, ফলে এই মুহূর্তে তাদের সঙ্গে কথা বলার কোনো ভিত্তি নেই।
রাশিয়ার অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং ড্রোন আক্রমণে ইউক্রেনের অবকাঠামো ক্রমশ ভেঙে পড়ছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত ধ্বংসের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে, মার্কিন সামরিক সহায়তা পেয়ে ইউক্রেন আরও শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাচ্ছে। তবে রাশিয়ার স্থল ও আকাশ হামলার মুখে পরিস্থিতি প্রতিদিনই জটিল হয়ে উঠছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এ মুহূর্তে নতুন মোড় নিয়েছে। দুই পক্ষই কৌশল পরিবর্তন করছে, আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিষয়টিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।