ট্রাম্পের ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কঠোর অবস্থান
- By Jamini Roy --
- 13 December, 2024
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার তীব্র সমালোচনা করেছেন। টাইম ম্যাগাজিনের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “যা ঘটছে, তা সম্পূর্ণ পাগলামি।” ২০২৪ সালের টাইম ম্যাগাজিনের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হওয়ার পর দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেন।
ট্রাম্প বলেছেন, “রাশিয়ার কয়েক শ মাইল ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ নিয়ে আমার তীব্র আপত্তি রয়েছে। এটা কেন করা হচ্ছে? এতে যুদ্ধ আরও উত্তেজক এবং ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ হওয়া উচিত।” তার এই মন্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি ইউক্রেনকে দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেন। উত্তর কোরিয়ার সেনারা রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত হওয়ায় বাইডেন এই অনুমতি দেন। তবে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন এবং যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চান বলে জানান।
ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার কাছে এই যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য দারুণ একটি পরিকল্পনা আছে। কিন্তু এখন তা প্রকাশ করলে তা অর্থহীন হয়ে যাবে।”
যুদ্ধ বন্ধে একটি চুক্তি করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, “যদি আপনি চুক্তি করতে চান, তার জন্য একমাত্র পথ হলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান, পরিত্যাগ করা নয়।” তবে তিনি ইউক্রেনকে সরাসরি পরিত্যাগ করবেন কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মন্তব্য এড়িয়ে গেছেন।
টাইমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধের মানবিক বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। বিশেষত গত মাসে সাধারণ মানুষের হতাহতের সংখ্যা দেখে তিনি ‘স্তম্ভিত’ হয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, “উভয় পক্ষের জন্যই একটি চুক্তি উপকারী হবে।”
রাশিয়া এবং পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ তার চূড়ান্ত এবং ভয়ংকর ধাপে প্রবেশ করছে। যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার অগ্রগতি দ্রুততম পর্যায়ে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, ট্রাম্পের দ্রুত যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি কিয়েভে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ইউক্রেন সরকার আশঙ্কা করছে, কোনো চুক্তি হলে তার বেশির ভাগ সুবিধা পাবে মস্কো।
যুক্তরাষ্ট্র গত শনিবার ইউক্রেনের জন্য ৯৮ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলারের নতুন অস্ত্র এবং সামরিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। এ সহায়তা প্যাকেজের মাধ্যমে কিয়েভ আরও শক্তিশালী অস্ত্র পাবে।
আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। শপথের আগে তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে প্যারিসে বৈঠক করেন।
এই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের মন্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে তিনি যুদ্ধের অবসানে জোর দিচ্ছেন। তবে এই কূটনৈতিক অবস্থান যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ককে কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা সময়ই বলে দেবে।