সিরিয়ায় আসাদের পতন: ঐতিহাসিক সুযোগ বলে মন্তব্য বাইডেনের
- By Jamini Roy --
- 09 December, 2024
সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনকে সিরিয়ার জনগণের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্থানীয় সময় রবিবার (৮ ডিসেম্বর) হোয়াইট হাউজে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বাইডেন এই প্রতিক্রিয়া জানান। বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি দেশটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে।
বাইডেন বলেছেন, “বাশার আল-আসাদকে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। সিরিয়ায় সরকারের এই পতন দেশ পুনর্গঠনের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এটি ন্যায়বিচারের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” তিনি আরও বলেন, “আসাদ ও তার পিতার ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চলা কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান সিরিয়ার জনগণের জন্য মুক্তির নতুন সূচনা।”
বাইডেন সতর্ক করে বলেন, সিরিয়ায় আসাদের শাসনের পতনের পর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো, বিশেষত আইএসআইএস, নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা এই ধরনের কোনো পুনরুত্থান হতে দেবে না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড নিশ্চিত করেছে যে, তারা সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে আইএস লক্ষ্য করে ৭৫টির বেশি হামলা চালিয়েছে। এই হামলাগুলো আইএসআইএস যেন আসাদের পতনের পর পরিস্থিতির সুযোগ নিতে না পারে তা নিশ্চিত করার জন্য চালানো হয়।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক বিদ্রোহীদের হাতে দখল হয়ে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছাড়েন। তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রাশিয়ায় পালিয়ে যান। রাশিয়ার বার্তাসংস্থা তাস এবং রিয়া নভস্তির বরাতে রয়টার্স জানায়, আসাদ ও তার পরিবার মস্কোতে আশ্রয় নিয়েছে। রাশিয়া মানবিক বিবেচনায় তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে।
বাশার আল-আসাদ ২০০০ সালে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন। তার বাবা ২৯ বছর ধরে সিরিয়ার ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন, যা ছিল কঠোর দমননীতি ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিচ্ছবি। বাশারও একইভাবে নির্যাতন ও শাসন চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছেন। তবে বিদ্রোহীদের চাপের মুখে অবশেষে তাকে দেশ ছাড়তে হলো।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আসাদের পতনের মধ্য দিয়ে সিরিয়া নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এটি দেশটির জনগণের জন্য মুক্তির নতুন সুযোগ এবং একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলছে। তবে আইএসসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপ সিরিয়ার স্থিতিশীলতার পথে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিশ্বনেতারা সিরিয়ার জনগণের পাশে থাকার এবং দেশটির পুনর্গঠনে সমর্থন দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। অন্যদিকে, বিদ্রোহী বাহিনী সিরিয়ার প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।