কিয়েভের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র লক্ষ্যবস্তু, ওরেশনিক মিসাইল নিয়ে পুতিনের হুঁশিয়ারি
- By Jamini Roy --
- 28 November, 2024
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এক বক্তৃতায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেন্দ্রগুলোতে হামলার হুমকি দিয়েছেন। তিনি জানান, নতুন ওরেশনিক আইআরবিএম (ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল) দিয়ে এ হামলা চালানো হবে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ন্যাটোর অস্ত্রের তুলনায় প্রযুক্তিগতভাবে বহুগুণ উন্নত বলে দাবি করেন তিনি।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থার (সিএসটিও) শীর্ষ সম্মেলনে পুতিন বলেন, “বিশ্বে রাশিয়ার ওরেশনিকের মতো কোনো মিসাইল নেই। ন্যাটো দেশগুলো এমন প্রযুক্তি তৈরি করতে সক্ষম হবে বলেও মনে হয় না।"
চলতি মাসের শুরুর দিকে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তৈরি এটিএসিএমএস (ATACMS) ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে হামলা চালায়। এর প্রতিশোধ হিসেবে রাশিয়া ২১ নভেম্বর তাদের নতুন ওরেশনিক মিসাইল ইউক্রেনের দনিপ্রো শহরে নিক্ষেপ করে। এরপর ২৩ ও ২৫ নভেম্বর ইউক্রেন রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছে মস্কো।
পুতিন জানান, ইউক্রেনের এই দীর্ঘ-পাল্লার হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাশিয়া কিয়েভের সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেন্দ্রসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পুতিন দাবি করেন, রাশিয়ার নতুন ওরেশনিক মিসাইল এমন প্রযুক্তিতে তৈরি যা ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঠেকাতে পারবে না। তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে ওরেশনিক হাইপারসনিক মিসাইল ব্যবহৃত হয়েছে। শিগগিরই এর আরও উন্নত সংস্করণ পরীক্ষা করা হবে।”
এছাড়া তিনি জানান, রাশিয়া বর্তমানে ন্যাটোর তুলনায় দশগুণ বেশি ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন করছে এবং এ সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
পুতিন সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের কৌশলগত সিদ্ধান্ত কেন্দ্রগুলোতে রাশিয়া অচিরেই হামলা চালাবে। এর আগে, রাশিয়া কখনোই কিয়েভের সরকারি ভবনে হামলা চালায়নি। তবে এখন মস্কো কৌশলগত কারণে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
পুতিন আরও বলেন, “ইউক্রেন যদি পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ না করে, তাহলে আমরা কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাব।”
রাশিয়া এই মাসে দ্বিতীয়বারের মতো ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে ১০ লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলাকে মানবিক সংকট হিসেবে অভিহিত করেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত দিন দিন আরও জটিল আকার ধারণ করছে। রাশিয়ার ওরেশনিক মিসাইলের ব্যবহার ও পুতিনের কৌশলগত হুমকি পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিয়েভে হামলা চালানো হলে এ সংঘাত বিশ্বব্যাপী আরও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।